চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী এলাকায় গণধর্ষণের শিকার হওয়া নারী মাত্র ১৭ দিন আগে বসেছিলেন বিয়ের পিঁড়িতে। পাঁচ দুর্বৃত্ত মিলে ওই তরুণীকে তার স্বামীসহ পথ আটকানোর পর সহযোগিতা চেয়ে এক বন্ধুকে ফোন করেছিলেন ওই নারীর স্বামী। কিন্তু উদ্ধার করতে আসা জাবেদ নামের সেই বন্ধুও শেষ পর্যন্ত বন্ধুর সদ্যবিবাহিত স্ত্রীকে ধর্ষণে অংশ নেন। সহযোগিতা করতে এসে শফি ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের সঙ্গে উল্টো হাত মেলান জাবেদ।
জানা গেছে, এক বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর মাত্র ১৭ দিন আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এই দম্পতি।
শনিবার (২৯ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ব্যক্তিগত কাজ শেষে রৌফাবাদের বাসায় ফিরছিলেন স্বামী-স্ত্রী। নগরের অক্সিজেন মোড়ে শফি নামের এক ব্যক্তি বাদশা মিয়া আর রবিনকে সঙ্গে নিয়ে তাদের পথ আটকান। তারা দুজন স্বামী-স্ত্রী নয়— এমন দাবি করে তাদের পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন তারা। পরে সেখান থেকে সিএনজিচালিত ট্যাক্সিতে করে তুলে নিয়ে গিয়ে অদূরের ছালমা কলোনিতে রাত আড়াইটা পর্যন্ত ৫ জন মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে স্ত্রীকে। বিয়ের মাত্র ১৭ দিনের মাথায় এমন বীভৎস অভিজ্ঞতার শিকার হলেন নববিবাহিতা এই তরুণী।
তরুণীর স্বামী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘জাবেদ আমার বাসার পাশে দিনরাত ২৪ ঘন্টা আড্ডা দেয়। তার সাথে তাই পরিচয় আছে। শফিরা যখন আমার বিয়ের প্রমাণ চাইলো তখন আমি জাবেদকে ফোন করে ডাকি। জাবেদ প্রথমে এসে বলছিল যে আমরা বিবাহিত। এটা বলতেই শফি তাকে গালিগালাজ করতে থাকে। পরে জাবেদকে ডেকে এক পাশে নিয়ে গিয়ে কথা বলে শফি। এরপর সে এসে আমাদের বলে, কোন সমস্যা নাই সিএনজিতে উঠো। কিন্তু আমি সিএনজিতে উঠতে না চাইলে আমাকে ধাক্কাধাক্কি করে সিএনজিতে তোলা হয়। সেখান থেকে সিএনজিতে করে ছালমা কলোনিতে নিয়ে গিয়ে তারা এই ঘটনা ঘটায়।’
পরে ৯৯৯-এর জরুরি সেবায় কল পেয়ে রাত আড়াইটার দিকে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে এই ঘটনার মূল হোতা শফি এখন পর্যন্ত পলাতক। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে শফি ওই এলাকায় বায়োজিদ থানার সোর্স হিসেবে পরিচিত।
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ৪ আসামির মধ্যে তিনজনই রোববার (৩০ আগস্ট) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তারা হলেন মো. বাদশা মিয়া , মো. জাবেদ ও মো. রবিন। অপর আসামি মো. ইব্রাহিমকে একদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। ইব্রাহিম ছালমা কলোনির ইনচার্জ। শুরু থেকেই এই ঘটনার দায় অস্বীকার করে আসছেন তিনি।
এআরটি/সিপি