চট্টগ্রামে করোনা রোগী ১০ হাজার পূর্ণ হওয়ার চারদিনের মাথায় ১১ হাজারের মাইলফলকে পৌঁছে গেল। গত ৬ জুলাই ২৯২ জন করোনা আক্রান্ত নিয়ে চট্টগ্রামে ১০ হাজার ১৮০ জনে এসে দাঁড়িয়েছিল করোনা রোগীর সংখ্যা। এরপর প্রতিদিনই তিনশ ছুঁই ছুঁই করোনা আক্রান্ত নিয়ে চতুর্থদিনে এসে এই সংখ্যা এখন ১১ হাজার ৩১। এর মধ্যে নগরের সাত হাজার ৬৭৮ জন এবং চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার তিন হাজার ৩৫৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্ত ২৫৯ জনের মধ্যে নগরের ১৭৬ ও উপজেলার ৮৩ জন। একই সাথে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রামে করোনায় ছয় জনের প্রাণহানি হলো। যাদের পাঁচজনই নগরের। এই নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ালো ২১০ জনে। ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন আরও ১৮ জন। ফলে এ পর্যন্ত একহাজার ৩২৪ জন রোগী করোনাজয় করলেন।
বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) সকালে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, চট্টগ্রামের সরকারি চারটি ও বেসরকারি দুটি ল্যাব মিলিয়ে মোট একহাজার ২৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় আরও ২৫৯ জনের দেহে করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গেছে। নতুন শনাক্তদের মধ্যে নগরের ১৭৬ জন এবং বিভিন্ন উপজেলার ৮৩ জন। একইসাথে চট্টগ্রামে সুস্থ হয়েছেন আরও ১৮ জন এবং মারা গেছেন ৬ জন, যাদের ৫ জন নগরের ও ১ জন উপজেলার। এদিনও কক্সবাজার ল্যাবে চট্টগ্রামের কোন নমুনার পরীক্ষা হয়নি।
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামের প্রধান করোনা পরীক্ষাগার ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি)-তে দিনের সর্বোচ্চ ২৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩৮ জনের দেহে করোনা পজিটিভ মিলেছে। যাদের মধ্যে ১৪ জন নগরের ও ২৪ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি (সিভাসু) ল্যাবে আগেরদিনের চেয়ে কিছুটা বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে ২০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসের জীবাণু পাওয়া গেছে ২৮ জনের শরীরে। যাদের ২১ জন নগরের ও ৭ জন উপজেলার বাসিন্দা।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ল্যাবে এদিন অন্যান্যদিনের মতো সর্বাধিক নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় আগেরদিনের চেয়ে প্রায় প্রায় তিনশ (২৯৭) কম নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ফলে ২৩৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪২ জনের শরীরে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়, যাদের মধ্যে ৩৬ জন নগরের ও ৬ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এর আগে টানা দুদিন চট্টগ্রামের প্রথম ল্যাব হিসেবে একদিনে পাঁচশর উপরে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে আগেরদিনের চেয়ে কিছুটা কম নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মোট ১৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন ৩৯ জন। যাদের ১১ জন নগরের ও ২৮ জন বিভিন্ন উপজেলার।
অন্যদিকে, বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ১৩২ জনের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায় ৩৮ জনের। যাদের ৩১ জনই নগরের এবং বাকি ৭ জন উপজেলার বাসিন্দা।
গত ২৪ ঘণ্টায় শেভরণ ল্যাবে আগেরদিনের চেয়ে ১৬০টি বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সেখানে ২৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে দিনের সর্বাধিক ৭৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আক্রান্তদের মধ্যে ৬৩ জন নগরের ও ১১ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
এদিনও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে চট্টগ্রামের কোন নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।
উপজেলা পর্যায়ে নতুনভাবে করোনা শনাক্ত ৮৩ জনের মধ্যে আবারও সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া গেছে হাটহাজারী উপজেলায়। সেখানে ২০ জনের দেহে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। টানা তৃতীয় দিনের মতো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ করোনা রোগীর খোঁজ মেলে রাউজানে, ১৭ জন। এছাড়া চন্দনাইশে ৮ জন, সাতকানিয়া ও মিরসরাইয়ে ৬ জন করে, পটিয়ায় ৫ জন, লোহাগাড়া, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া ও সীতাকুণ্ডে ৪ জন করে, বাঁশখালীতে ৩ জন, বোয়ালখালীতে ২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।
এমএহক