১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ১৯ বছর পর কারামুক্ত পটিয়ার হাফিজুর

আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ১৯ বছর ৩ মাস পর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন জাতীয় পার্টি নেতা হাফিজুর রহমান হাফিজ (৬৫)।

বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হন বলে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেন জেলার মাসুদ হোসেন জুয়েল।

জেলার বলেন, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় কেএম এনামুল হকের মুক্তির পর সন্ধ্যা ৬টার দিকে পটিয়ার হাফিজুর রহমানকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তার সাজার মেয়াদ কমানোর কাগজপত্র দেখে তার মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

হাফিজুর রহমান হাফিজ চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝেরঘাটা এলাকার মৃত নুর আহম্মদ সওদাগরের ছেলে। তিনি আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন। ২০০৫ সালের ২৬ অক্টোবর হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে এ মামলায় চট্টগ্রাম কারাগার থেকে মুক্তি পান চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক। এইদিন একই মামলায় কাশিমপুর এবং কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আরও পাঁচজন।

গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনায় করা মামলায় গত ১৮ ডিসেম্বর মৃত্যুদণ্ড থেকে লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ছয়জন খালাস পান। পরে ১৪ জানুয়ারি বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ পাঁচজনের সাজা কমানোর রায় দেন।

রায়ে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়া হাফিজুর রহমানসহ জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থার তৎকালীন মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, এনএসআইয়ের সাবেক উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন এবং তৎকালীন পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) সাহাব উদ্দিন আহাম্মদের সাজার মেয়াদ কমিয়ে ১০ বছর করা হয়। এছাড়া যাবজ্জীবন পাওয়া ১৪ জনের মধ্যে পরেশ বড়ুয়ার সাজা কমিয়ে ১৪ বছর করা হয়।

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান। এনিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অস্ত্র চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন।

এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়।

অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের। অস্ত্র আইনে করা মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে পৃথক আপিল করেন আসামিরা।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm