১০ কম্পিউটারে একমাস লেগেছে এস আলমের আড়াই লাখ কোটি টাকার লেনদেন এন্ট্রিতে
জালিয়াতি করে দুই ছেলেও ‘হোয়াইট’ করেছেন ৫০০ কোটি
চট্টগ্রামভিত্তিক এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ ও তার পরিবারের ব্যাংক একাউন্টগুলোতে ২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য মিলেছে। ১০টি কম্পিউটারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাতজন কর্মকর্তা এক মাস ধরে এন্ট্রি দিয়েও লেনদেনের তথ্যগুলো শেষ করতে পারেননি।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর রাজস্ব ভবনে ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর কর্মকর্তাদের নিয়ে আয়কর গোয়েন্দা আয়োজিত ‘কর ফাঁকি ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধি’র কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরেন আহসান হাবিব।
এস আলম ও তার পরিবারের কর ফাঁকির খোঁজ করতে গিয়ে এই ২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব জানান, ২ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৩৬ হাজার কোটি টাকা গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত পাঁচ বছর ব্যাংকে স্থিতি ছিল। এ থেকে ৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যাংক সুদ পেয়েছে। এসব লেনদেনের বেশিরভাগই তারা আয়কর নথিতে না দেখিয়ে লুকিয়েছে।
সিআইসির মহাপরিচালক বলেন, ‘এস আলমের দুই ছেলে জালিয়াতি করে ৫০০ কোটি টাকা হোয়াইট করেছে। কিন্তু ওই ব্যাংক আজ পর্যন্ত আমাকে তথ্য দেয়নি। তদন্ত করে দেখা গেল, এসআইবিএলের পটিয়া শাখায় ২১ ডিসেম্বরে পে অর্ডার কেটেছে। পরে ক্লিয়ারিং হয়। অথচ আইন শেষ হয়ে গেছে ৩০ জুন। তখন সে ব্যাংক ওলটপালট করে আগের ডেটে পে অর্ডার দেয়। এটা হেড অফিস থেকে করা হয়। আরো অনেক সমস্যা আছে। আমরা ধরেছি।’
‘আমার হাতে অসংখ্য ব্ল্যাংক চেক আছে অনেক ব্যাংকের। অনেক তথ্য আছে’— এমন কথা উল্লেখ করে মহাপরিচালক আহসান হাবিব বলেন, ‘আজও একটা রানিং ব্যাংক চেয়ারম্যানের ১২১ কোটি টাকা ব্লক করেছি।’
বৃহৎ করদাতা ইউনিটের কর কমিশনার মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক স্টেটমেন্ট এনে দেখছি যে হিউজ টাকা শুধু ডেবিটই হচ্ছে। কোথায় যাচ্ছে কোনো খোঁজ পাচ্ছি না। টাকাটা শুধু উত্তোলন হচ্ছে। প্রতিদিন শুধু হিউজ টাকা উত্তোলন হচ্ছে এই করদাতাদের। এই টাকাগুলো কোথায় যাচ্ছে? কোথায় যায় এই প্রশ্ন যখন করি, আর উত্তর দিতে পারেন না।’