হেফাজত ও খেলাফত মজলিস নিষিদ্ধের দাবি ইসলামী ফ্রন্টের

ইসলামের নামে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে এবং রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অস্থিরতা নিরসনে হেফাজতে ইসলাম ও খেলাফত মজলিস নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

সম্মেলেন সংগঠনে মহাসচিব এমএ মতিনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ স উ ম আবদুস সামাদ।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যারা এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী নয়, তারাই আজ ইসলামের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দেশে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর বিচার হলেও একাত্তরে একই রকম যুদ্ধাপরাধে যুক্ত ওহাবি মতাদর্শী কওমি মুজাহিদ বাহিনীর বিচার না হওয়ায় তারা আজ এ দেশে মধ্যযুগীয় কায়দায় তালেবানি মডেলে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখছে। নৈতিক পদস্থলন ও জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ডে যুক্ত হেফাজতকে অবশ্যই নিষিদ্ধ করতে হবে।

সম্প্রতি পুলিশ প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের রাজনৈতিক সংগঠন খেলাফত মজলিসের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততার কথা উঠে এসেছে। এসব তথ্য যদি সত্য হয় তাহলে খেলাফত মজলিসের নিবন্ধন বাতিলসহ জঙ্গি সম্পৃক্ততার কারণে এই দলটিকেও নিষিদ্ধ করতে হবে— বলা হয় লিখিত বক্তব্যে।

আবদুস সামাদ আরও বলেন, ১৯৭১ সাল থেকে আজ পর্যন্ত কওমিদের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় তারা সুযোগ পেলেই নিজেদের খোলস খুলে জঙ্গিবাদি রুপে আবির্ভূত হয়েছে। ২০১৩ ও ২০২১ সালে দেশের জনগণ তাদের স্বরূপ চিনেছে। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখা এ জঙ্গিগোষ্ঠী সরাসরি দেশের সার্বভৌমত্বের বিরোধী দেশি-বিদেশি শক্তির মদদে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

দেশের এমপিওভুক্ত ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব মাদ্রাসা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও শিক্ষা নীতিমালা তৈরি করা হলেও কওমি মাদ্রাসাগুলো সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা আলোকে পরিচালিত হচ্ছে না। তারা সরকারি স্বীকৃতি ভোগ করে সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে কাজ করছে। তাদের আলিয়া নেসাবের মতো একই পাঠ্যসূচিভুক্ত করে সরকারি নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত করতে হবে। সম্প্রতি কওমি মাদ্রাসা বোর্ড থেকে তাদের নিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসাগুলোতে রাজনীতি নিষিদ্ধের নামে যে ঘোষণা এসেছে তা অনেকটা জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল। যতদিন এই ধারার মাদ্রাসাগুলো মূলস্রোতে ফিরে আসবে না, রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসবে না, ততদিন তারা একের পর এক ভিন্ন নামে, ভিন্ন কর্মসূচিকে সামনে এনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে যাবে। তাছাড়া, রাষ্ট্রীয়ভাবে মাদ্রাসা শিক্ষাকে দুধারায় বিভক্ত করার ফলে অদূর ভবিষ্যতে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা করছে ইসলামী ফ্রন্ট— বলেন আবদুস সামাদ।

তিনি আরও বলেন, সব কওমি জঙ্গি নয়, তবে সব জঙ্গিই কওমি। তাই কওমি জঙ্গিদের আর রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার না করে বিচার করতে হবে।

ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান এম এ মান্নানের সভাপতিত্ব সংবাদ সম্মলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আল্লামা সৈয়দ মছিহুদ্দৌলা, অধ্যক্ষ আল্লামা আহমদ হোসাইন আল কাদেরী, অধ্যক্ষ শাহ খলিলুর রহমান নিজামী, শাইখ আবু সুফিয়ান খান আবেদী, রেজাউল করিম তালুকদার, ইঞ্জিনিয়ার নুর হোসাইন, মাস্টার মুহাম্মদ আবুল হোসাইন, ওবাইদুল মুস্তফা কদমরসুলী, আব্দুন নবী আল কাদেরী, মাওলানা ফেরদৌসুল আলম খান, মাওলানা আবদুল খালেক, অধ্যক্ষ হাফেজ আহমদ কাদেরী, নাসির উদ্দীন মাহমুদ, ইয়াসিন হোসাইন হায়দরি, করিম উদ্দিন নূরী, আলী হোসাইন, অধ্যাপক আবদুর রহিম মুনিরী, আশরাফ হোসাইন, সাইদুল হক সাঈদ কাজেমী, সৈয়দ আবু আজম, অধ্যক্ষ ডি আই এম জাহাঙ্গীর, সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া, মুহাম্মদ নুরুল্লাহ রায়হান খান, হাবিবুল মোস্তফা সিদ্দিকী, জামাল উদ্দিন খোকন, জামাল উদ্দিন, সালাউদ্দিন খোকন, মো. এনামুল হক, বদরুল হুদা তারেক, আতাউল্লাহ, খোরশেদুল আলম সুজন, শাহজাহান বাদশা, হাফেজ আতিকুর রহমান, আবদুল্লাহ আল জাবের, কেএম আজাদ রানা, নুরে রহমান রনি, আমির হোসেন, আবদুল্লাহ আল রোমান, জহির উদ্দিন, কাজী মো. আরাফাত প্রমূখ।

সিএম/এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!