হেফাজতের মুফতি হারুন ইজাহার কারাগারে

হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হারুন ইজাহারকে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে তাণ্ডবের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আদালতে হাজিরের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) রাত ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনজুমান আরা শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে গোলাম রব্বানী ইসলামাবাদী নামের হেফাজতের আরেক কর্মীকেও কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে বুধবার রাত ১১টার দিকে নগরীর খুলশী থানার লালখানবাজারে জামেয়াতুল উলুম আল-ইসলামিয়া লালখান বাজার মাদরাসা থেকে হারুনকে আটক করে র‌্যাবের একটি দল। এরপর তাকে নগরীর পতেঙ্গায় র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। জিজ্ঞাসাবাদের পর বৃহস্পতিবার বিকালে হারুন ইজাহারকে হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করা হলে হাটহাজারীতে যে তাণ্ডব ও সহিংসতা হয়েছে, এ সংক্রান্ত তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। হারুন ইজাহারের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। সোমবার শুনানি হতে পারে।

হারুন ইজাহারের আইনজীবী মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি হাটহাজারী থানায় হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় হারুন ইজাহারকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ওই থানায় কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছে। এর একটিতেও হারুন ইজাহার এজাহারভুক্ত আসামি নন। সন্ধিগ্ধ হিসেবে তাকে আসামি দেখিয়ে আদালতে আনা হয়। কোর্ট রেকর্ডমূলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। কোনো শুনানি হয়নি। এমনকি মামলার রেকর্ডপত্রও আমরা দেখিনি।

র‌্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের পর আমরা হারুন ইজাহারকে হাটহাজারী থানায় হস্তান্তর করি। হাটহাজারী থানা পুলিশ তাকে গত ২৬ মার্চ থেকে তিনদিন ধরে হাটহাজারীতে যে তাণ্ডব ও সহিংসতা হয়েছে, এ সংক্রান্ত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে।

হারুন ইজাহারের বাবা ইজাহারুল ইসলাম লালখান বাজার মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা। জঙ্গিবাদি কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বরাবর আলোচিত বাবা-ছেলে উভয়ই হেফাজতে ইসলামের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন গত ২৬ মার্চ থেকে প্রায় সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে তাণ্ডবের ঘটনায় এরইমধ্যে হেফাজতের ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ কয়েকজন শীর্ষ নেতা গ্রেফতার হয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে জুনায়েদ বাবুনগরী বারবার গণমাধ্যমে বার্তা পাঠিয়ে ‘হেফাজতে ইসলাম সরকারবিরোধী নয়’ বলে প্রচার করেন। কয়েকদিন আগে হেফাজত নেতাদের একটি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবনে গিয়ে দেখাও করেন। তবে হেফাজতের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে।

এদিকে, গত রোববার (২৫ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে আকস্মিকভাবে জুনায়েদ বাবুনগরী ফেসবুকে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণা দেন। আবার এ ঘোষণার রেশ না কাটতেই রাত সাড়ে তিনটার দিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ফেসবুক পেইজ থেকে তিন সদস্যের আহবায়ক কমিটি গঠনের কথাও প্রচার করা হয়।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!