হাসপাতালে ফাঁকা হচ্ছে ‘জেনারেল সিট’, রোগীতে ঠাসা আইসিইউ

চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসায় বিভিন্ন হাসপাতালে সাধারণ সিট ফাঁকা হতে শুরু করলেও এখনো রোগীতে ঠাসা থাকছে আইসিইউ (ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট সিট)। বিভিন্ন হাসপাতালের করোনা চিকিৎসায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বলছেন, এখন যেসব রোগী আসছে সেগুলো বেশিরভাগই সংকটাপন্ন রোগী। তাই আইসিইউ ফাঁকা থাকছেই না।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০০টি সাধারণ সিটে রোগী ভর্তি ছিল ১৮৫ জন। সিট ফাঁকা ছিল ১১৫টি। আর আইসিইউ’র ১০টি সিটে ১০ জন রোগী ভর্তি আছে।

ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে ৫০টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ২৪ জন। ফাঁকা আছে ২৬টি। তবে ৫টি আইসিইউ সিট সবগুলোতেই রোগী আছে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১৫৮টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ১২৬ জন। খালি আছে ৩২টি সিট। আইসিইউ’র ১৮টি শয্যার মধ্যে সবকটিতে ভর্তি আছে রোগী।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে ১৫২ সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ১২৬ জন। সিট ফাঁকা আছে ৩২টি। ২০টি আইসিইউ সিটের সবগুলোতে রোগী ভর্তি আছে।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে হাসপাতালে ৫৪টি সিটের বিপরীতে কোন রোগী ভর্তি নেই। খুলশী হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ১০০টি সিটের বিপরিতে রোগী ভর্তি আছে ৭ জন। সিট ফাঁকা আছে ৯৩টি।

হালিশহর আল মানাহিল নারচার জেনারেল হাসপাতালে ৪৩টি সিটের বিপরিতে রোগী ভর্তি আছে ৩৮ জন রোগী। খালি আছে ৫টি সিট।

পার্কভিউ হাসপাতালে ৮০টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৮২ জন। ২৪টি আইসিইউ বেডের সবগুলোতেই রোগী ভর্তি আছে।

মেহেদিবাগ ম্যাক্স হাসপাতালে ৫৭টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৬২ জন। আইসিইউর ১৩টি সিটেই রোগী ভর্তি আছে।

সিএসসিআর হাসপাতালে ২৭টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ১৩ জন। ৫টি আইসিইউ বেডে রোগী ভর্তি আছে ৩ জন। ফাঁকা রয়েছে ২টি।

সাগরিকা সিএমপি-বিদ্যানন্দ ফিল্ড হাসপাতালে ৭০টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি ৪৫ জন। ফাঁকা আছে ২৫টি সিট।

মেহেদিবাগ ন্যাশনাল হাসপাতালে ৫৪টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৩৯ জন। ফাঁকা আছে ১৫টি সিট। ৮টি আইসিইউ বেডে রোগী ভর্তি আছে ৮ জনই।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ৫০টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৪০ জন। ফাঁকা আছে ১০টি। ৭টি আইসিইউ বেডের বিপরিতে রোগী ভর্তি আছে ৬ জন। ফাঁকা আছে ১টি।

ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯০টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৫৩ জন। ফাঁকা আছে ৪৭টি সিট। ২টি আইসিইউ বেডের বিপরিতে রোগী ভর্তি আছে ২ জন।

কাতালগঞ্জ ডেল্টা হাসপাতালে ২৩টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৮ জন। খালি আছে ১৫টি সিট। ৭টি আইসিইউ বেডের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ৪ জন।

সাউদার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৪টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ১৩ জন। সিট ফাকা আছে ২১টি। আইসইউ ৬টি বেডের বিপরিতে রোগী ভর্তি আছে ৪ জন। ফাঁকা আছে ২টি সিট।

আলহাজ মোস্তফা হাকিম করোনা আইসোলেশন সেন্টার কাট্টলীতে ৫০টি সিটের বিপরিতে রোগী ভর্তি আছে ১৪ জন। খালি আছে ৩৬টি সিট।

রয়েল হাসপাতালে ২৫টি সিটের বিপরীতে রোগী ভর্তি আছে ২১ জন। খালি আছে ৪টি সিট। ১০টি আইসিইউ বেডের বিপরিতে রোগী ভরতি আছে ৯ জন। ফাঁকা আছে ১টি।

চট্টগ্রাম সিভিল সারজন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘করোনা রোগীদের সাধারণ সিট খালি হচ্ছে কোনো কোনো হাসপাতালে। কিন্তু আইসিইউ বেড ফাঁকা থাকছে না। বরং রোগীদের আইসিইউ বেডের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে প্রতিদিন।’

তিনি আরও বলেন, ‘এখন যেসব রোগী করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে তাদের বেশির ভাগেরই অক্সিজেন স্যাচুরেশন অনেক নীচে। তাই শেষ মুহুর্তে আইসিইইউ বেড না পেলে রোগী বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। আর এসব খারাপ রোগী আইসিইউ থেকেও ফিরে আসছে কম।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (১৬ আগষ্ট) ১১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে চট্টগ্রামে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেডজোনের ছিল ৬ জন রোগী। এ ৬ জন রোগীই আইসিইতে ভর্তি ছিল। বাকি ৫ জনের মধ্যে ৩ জন ভর্তি ছিল মা ও শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!