অনেক আশা দেখিয়ে ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম নগরীতে যে প্রকল্পের উদ্বোধন করেছিলেন, দুই বছর পর সেই প্রকল্প নিয়েই ক্ষোভ ঝাড়লেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির ১৩তম বৈঠকে চট্টগ্রামের হালিশহর হাউজিং এস্টেটের এ-ব্লকে ‘এনএইচএ মাল্টিপারপাস টাওয়ার’ নির্মাণ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। পাশাপাশি কাজের অগ্রগতি বাড়ানোর সুপারিশও করা হয়।
চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরে ২২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘এনএইচএ মাল্টিপারপাস টাওয়ার’ নামের একটি ভবন নির্মাণের কাজে নির্ধারিত সময় দুই বছরে অগ্রগতি হয়েছে সামান্যই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলা ও গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই মূলত প্রকল্পের কাজে অগ্রগতি নেই— এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে এই মাল্টিপারপাস টাওয়ারের নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
হালিশহরের এ-ব্লকে ‘এনএইচএ মাল্টিপারপাস টাওয়ার’ নামের ভবনটি নির্মাণের কাজ শুরু করা হয় ২২২ কোটি টাকা ব্যয় ধরে। চট্টগ্রামে এটিই গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বৃহৎ কোনো প্রকল্প। ওই সময় জানানো হয়, ৮৫ কাঠার ওপর সাততলা ভবনের পুরোটাই হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। দুটি ফ্লোরে এক সাথে দুহাজার মানুষের খাবার সুবিধা সম্বলিত কমিউনিটি হল ছাড়াও ওই টাওয়ারে চারটি সিনেপ্লেক্স, শপিংমল, আধুনিক ব্যায়ামাগার, পার্লার, ফুডকোর্টসহ আরও সুবিধা থাকবে— এমনটিই জানানো হয়েছিল।
২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর উদ্বোধন করা প্রকল্পের কাজ পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে শেষ করা হবে বলে জানানো হয়েছিল জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে। কিন্তু কাজের অগ্রগতি হয়েছে সামান্যই।
এদিকে মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ঢাকার রমনা পার্কের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং রমনা লেকসহ সার্বিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের পূর্বের নকশা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে দ্রুত বাস্তবায়ন ও শিশু পার্কের আধুনিকায়ন এবং পার্ক এলাকায় মসজিদ বাদে নকশা বহির্ভূত সব স্থাপনা, জরাজীর্ণ ভবন ও রেস্টুরেন্ট ভেঙে কফিশপ নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে।
গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় কমানোর জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে ব্যবস্হা নিতে মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি।
বৈঠকে গণপূর্ত অধিদপ্তর, রাজউক, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের চলমান প্রকল্পের সার্বিক কাজের অগ্রগতি ও ভবিষৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, মো. জিল্লুল হাকিম, মো. মনোয়ার হোসেন চৌধুরী, আনোয়ারুল আশরাফ খান এবং জোহরা আলাউদ্দিন অংশ নেন। এছাড়া বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, রাজউকের চেয়ারম্যানসহ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সিপি