হালদায় প্লাস্টিক বর্জ্যের দূষণ, মাঠে নামলেন ইউএনও

পর্যটকদের ফেলা বিভিন্ন প্লাস্টিক বর্জ্যের দূষণ থেকে কবল থেকে হালদা নদীকে রক্ষায় এলাকাবাসী ও ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা চাইলেন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উত্তর মাদার্শা হালদা নদীর রামদাসহাট এলাকায় হালদা পাড় পরিদর্শনের পর হালদা দূষণ রোধে তিনি বিভিন্ন নির্দেশনা দেন।

১২ কিলোমিটার ধরে ব্লক বসানো ও বাঁধ নির্মাণের ফলে হালদার পাড়ে প্রতিদিন এখানে ভিড় করে হাজারো পর্যটক। নদীর রূপ দেখতে আসা হাজারো পর্যটক প্লাস্টিকের প্যাকেট, বোতল, প্লেট, গ্লাস, চিপসের প্যাকেটসহ নানা আবর্জনা নদীতে ফেলে দেয়। এছাড়া এখানে ১৫ থেকে ২০টি ভাসমান দোকানের জমা আবর্জনা নদীতে ফেলে। নদীর পানিতে খাবার প্যাকেট, চিপস, পানির বোতলসহ নানা বর্জ্য ভাসতে দেখা যায়।

খাবারসহ নানা অপচনশীল প্লাস্টিক-পলিথিন নদীতে ফেলার ফলে হালদার মা-মাছ, ডলফিনসহ নানা প্রজাতির প্রাণীর বিচরণ হুমকির মুখে পড়ে। হালদা বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদদের মতে, হালদায় বিপন্ন প্রজাতির ডলফিন ও মা-মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হওয়ার কারণে (বিশেষত রামদাসহাট এলাকায়) এখানে প্লাস্টিক বর্জ্য দূরের কথা, জনসমাগমও হালদার জীববৈচিত্র্যের জন্য চরম হুমকির কারণ। অথচ প্রতিদিন হাজার পর্যটক সেখানে ভিড় করে ,নানা আবর্জনা নদীতে ছুঁড়ে ফেলে।

এ নিয়ে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রতিদিনে ‘পর্যটকদের হাতে হালদা নদীর সর্বনাশ’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এক সপ্তাহের মধ্যে হালদায় প্লাস্টিক বর্জ্য দূষণরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

সপ্তাহ পূরণের আগে আশ্বাসের একদিন পরেই উত্তর মাদার্শা রামদাসহাট এলাকায় হালদা পাড়ে গিয়ে দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন ইউএনও। হালদা নদীর পাড়ে ভ্রাম্যমাণ খাবারের দোকান করতে হলে ইউনিয়ন পরিষদের ছাড়পত্র নেওয়া, ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে পর্যটন এলাকায় পরিচ্ছন্ন ও নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করে দৈনিক আবর্জনা পরিস্কার করার নির্দেশনা দেন তিনি।

এ বিষয়ে মহিউদ্দিন চৌধুরী নামের এক এলাকাবাসী বলেন, হালদায় দূষণ রোধে উপজেলা প্রশাসনের পদক্ষেপ প্রশংসার দাবিদার। আমরা না জেনে হালদার সর্বনাশ ডেকে আনছি। হালদার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

আবুল হাশেম নামের একজন বলেন, হালদা কোন পর্যটন এলাকা নয়। একটি একটি প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র। অথচ এখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভিড়। খাবারসহ প্লাস্টিকের আবর্জনা নদীতে ছুঁড়ে ফেলে। হালদার দূষণরোধে সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে।

এ ব্যাপারে ইউএনও রুহুল আমিন বলেন, হালদা রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। হালদায় প্লাষ্টিকসহ সব দূষণরোধে ভ্রাম্যমান দোকানগুলোকে ইউনিয়ন পরিষদের ছাড়পত্র নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। হালদা পাড়ে কোন বর্জ্য ফেলে রাখা যাবে না। মা মাছ ডলফিনসহ সব ধরনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আগামীতে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সিএম/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!