হাটহাজারীর স্টেশন বাজারে জমেছে গরুর হাট

বৃষ্টির কাঁদাপানিতে মাখামাখি হলেও থেমে নেই পশুর হাটের কেনাবেচা। বৈরী আবহাওয়ার মাঝেও সকাল থেকে ক্রেতার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। হাটহাজারী থানার ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলীর স্টেশন বাজারে কোন প্রকার হাসিল ছাড়া এ বাজারে আসা দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আনা পশুর চাহিদা বেশি।

সরেজমিনে গিয়ে শনিবার (১০ আগস্ট) সকাল ১০টায় বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ফতেয়াবাদ কলেজ গেট থেকে ছড়ারকূল পর্যন্ত এলাকা জুড়ে গরু বেচাকেনা চলছে। মানুষের প্রচণ্ড ভিড়ে পা ফেলা দায়। সকাল থেকে বৃষ্টি হওয়ার কারণে পুরো বাজারজুড়ে কাঁদাপানিতে মাখামাখি। দেশের উত্তরবঙ্গ কুষ্টিয়া, নওগা, যশোর, ঠাকুরগাও গরু আনা হয়েছে। তবে স্থানীয় খামার, পার্বত্য এলাকা ও গৃহপালিত গরু কেনার প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে।

এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, ৭০ বছর আগের এই বাজারে মুলত চৌধুরী হাট রেল স্টেশনে বাজারে নেওয়ার জন্য আশপাশের বিভিন্ন পাহাড় ও এলাকা থেকে গরু এনে মজুদ করা হত। পরবর্তীতে এখানেই গরু হাট বসে। বর্তমানে বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে ওঠায় মানুষের ঘর, দোকানের সামনে ও রেললাইনেও পশু কেনাবেচা চলে। এ বাজারের বৈশিষ্ট্য হল স্থানীয় ও পাহাড়ি এলাকার গরু বিক্রয় ও কোন প্রকার হাসিল নেই।

বর্তমানে এলাকার কিছু স্থানীয় লোক গরু বিক্রেয়ের জায়গা বেচাকেনায় জড়িত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন গরু বিক্রেতা। ত্রিশ থেকে চল্লিশ হাজারে খাইন (গরু বাঁধার জায়গা) বেচাকেনা হয়েছে বলে অভিযোগ অনেক ব্যবসায়ীর।

রেল স্টেশনের সামনে কুষ্টিয়ার লাইরি বাজার থেকে ৭০টি গরুিএনেছেন বিক্রেতা মিজান চৌধুরী। তিনি বলেন, শুক্রবার (৯ আগস্ট) থেকে বেচাকেনা জমে উঠেছে। তবে আজ (শনিবার) ক্রেতা অনেক বেশি। বেচাকেনাও ভাল। তিনি চল্লিশটি গরু বিক্রি করেছেন বলে জানান। কমিশনার কার্যালয়ের সামনে প্যান্ডেলের ভেতর ২২ গরু এনেছেন মো. সাইদুজ্জামান।

একটি গরুর গায়ে জরিওয়ালা লালসালু কাপড় জড়িয়ে দেওয়া। গরুর সাথে থাকা আল আমিন ও দুলাল বলেন, নিজস্ব খামারের গরুটির দাম হাকিঁয়েছেন সাত লাখ টাকা। ক্রেতারা হাকিঁয়েছেন ৪ লাখ টাকা।

হাটহাজারীর স্টেশন বাজারে জমেছে গরুর হাট 1

জাহেদ, সাহেদ, নাজিম নামের একাধিক ত্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, গরুর দাম সহনীয় রয়েছে। অন্যদিকে বিক্রেতাদের অভিযোগ ক্রেতারা কম দামে পশু কিনতে চান।

এদিকে গরু আনা নেওয়া ও ট্রাক থেকে সড়কে ওঠা নামার কারণে হাটহাজারী সড়কে যানজট সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ সড়কে কোন পশু বাঁধতে দিচ্ছেনা। পুলিশ সদস্য মো ইব্রাহিম, রণি দে স্টেশন মোড়ে দায়িত্ব পালন করছেন।

তারা বলেন, গাড়ি পার্কিং ও সড়কে গরু বেচাকেনা বন্ধে বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে । দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ হাটহাজারী থানার সাব ইন্সপেক্টর অজয় কুমার পাল বলেন, গাড়ি ও গরু বহনকারী গাড়ি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তার পরেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সবাই সচেতন হলে দুর্ভোগ কমে আসে। বাজারে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা নেই।

সাবেক স্থানীয় কমিশনার মো জাফর আলম চৌধুরী বলেন, বহু পুরোনো এই বাজারের সুনাম রয়েছে। এখানে কোন প্রকার হাসিল নেই। আমি কমিশনার থাকাকালীন পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা করেছি। বাজার শেষ হলে দ্রুত সময়ে ময়লা আবর্জনা অপসারণ করেছি।

সিএম/এসএস

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!