হাজারী গলির দেড় কোটি টাকার স্বর্ণ মেরে দিয়ে ফেনীতে ধরা ওসিসহ ৬ পুলিশ
২০টি সোনার বারের মধ্যে উদ্ধার হল ১৫টি
স্বর্ণের ২০টি বার নিয়ে চট্টগ্রামের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী যাচ্ছিলেন ঢাকার পথে। ফেনী পৌঁছার পর হঠাৎই তার গাড়ির পথরোধ করেন গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন সদস্য। স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছে থাকা ২০টি স্বর্ণের বার তারা ছিনিয়ে নেন। না, কোনো মামলা নয়। এমনকি কোনো প্রাপ্তিপত্রও নয়। সাধারণ একটি ডাকাতির মতোই পুরো ঘটনা— তবে সেটা সত্যিকারের পুলিশের হাতেই। ছিনিয়ে নেওয়া ওই ২০টি স্বর্ণ বারের বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
রোববার (৮ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই ঘটনা ঘটার পর নিশ্চিত ছিনতাই বুঝতে পারার পর চট্টগ্রামের ওই ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাস ফেনী মডেল থানায় একটি ডাকাতির মামলা করেন।
স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাস চট্টগ্রাম শহরের হাজারী গলিতে ব্যবসা করেন। তিনি অভিযোগ করেন, রোববার তাকে আটক করার পর সোনার বারগুলো ছিনিয়ে নিয়ে রাত আটটার দিকে ছেড়ে দেন ডিবি পুলিশের ওই কর্মকর্তারা।
অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসে ফেনী জেলা পুলিশ। মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) স্বর্ণের বার ডাকাতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হল ফেনী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শকসহ ছয় পুলিশকে। এ সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় স্বর্ণের ১৫টি বার। বুধবার (১১ আগস্ট) তাদের আদালতে পাঠানো হচ্ছে।
গ্রেপ্তার এই ছয়জন হলেন ডিবির পরিদর্শক (ওসি) সাইফুল ইসলাম ভুঁইয়া, উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাহের হোসেন, মিজানুর রহমান ও নুরুল হক এবং সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) অভিজিত বড়ুয়া ও মাসুদ রানা। জানা যায়, স্বর্ণের বার ছিনিয়ে নেওয়ার মূল পরিকল্পনা ছিল ওসি সাইফুলের।
ফেনীর পুলিশ সুপার খন্দকার নুরুন্নবী জানিয়েছেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল কান্তি দাস ফেনীর ফতেহপুর রেলক্রসিং এলাকায় পৌঁছালে ডিবি পুলিশের ওই সদস্যরা তার গাড়ি থামান। ওই সময় তার কাছে থাকা ২০টি স্বর্ণবার নিয়ে যান তারা। এই ঘটনার পর গোপাল কান্তি তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে চারজনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যে অন্য দুজনকে আটক করা হয়।’
এখনও পর্যন্ত হদিস না পাওয়া বাকি পাঁচটি স্বর্ণবার উদ্ধারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘স্বর্ণবারগুলো বৈধ না অবৈধ তা তদন্ত করা হচ্ছে।’
সিপি