হত্যা মামলার ২ আসামি ধরা রাউজানে

চট্টগ্রামের রাউজানে পৃথক দুটি হত্যা মামলার পরোয়ানাভুক্ত পলাতক দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। সোমবার (২৫ জুলাই) রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন রাউজানের নুরুল আলম হত্যা মামলার পলাতক আসামি মো. আবুল কালাম আবু (৪০) ও প্রবাসী ফখরুল ইসলাম হত্যা মামলার আসামি মো. নজরুল ইসলাম (৪৭)।

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত সোয়া ৯টায় উপজেলার উরকিরচর ইউনিয়নের মিয়ারঘাটা থেকে আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি উপজেলার হারপাড়ার মা. নুরুল আলমের ছেলে।

আরও জানা গেছে, নুরুল আলমের সঙ্গে হত্যাকারীদের রাস্তা চলাচলের জায়গা নিয়ে বিরোধ ছিল। এর জেরে ২০১৮ সালের ৭ জুন নুরুল আলমের ঘরে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে ২ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় নুরুল আলম থানায় মামলা করতে যাওয়ার সময় পথে তাকে আটক করে মারধর করে দুষ্কৃতকারীরা। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করলে তার পরিবারের সকলের লাশ গুম করার হুমকি দেয়। এ ভয়ে নুরুল আলম ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান।

বছরখানেক পর ফিরে এসে ২০১৯ সালের ৫ জানুয়ারি উরকিরচর বাজারে গেলে দুষ্কৃতকারীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার ওপর আক্রমণ করে। এ সময় তাকে অপহরণের পর মেরে লাশ গুম করে ফেলে। পরদিন ৬ জানুয়ারি উপজেলার চন্দ্রাবিল এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার স্ত্রী বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মো. নুরুল আবছার বলেন, ‘গোপন সংবাদ পেয়ে অভিযান চালিয়ে আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি ওই মামলার দুই নম্বর পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি ছিলেন।’

এদিকে এর আগে অপর এক অভিযানে রাউজানের ওমান প্রবাসী ফখরুল ইসলাম হত্যা মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি মো. নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সোমবার বিকাল পৌনে ৫টায় রাউজানের চিকদাইর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার নজরুল উপজেলার দক্ষিণ সত্তা চিকদাইরের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে।

র‌্যাব জানায়, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ওমান থেকে দেশে আসেন ফখরুল ইসলাম। ১৮ অক্টোবর বিকালে উম্মে হাবিবা নামে এক নারী ও তার মা রাশেদা আক্তার হত্যার উদ্দেশে তাদের ভাড়া ঘরে নিয়ে যায় ফখরুলকে। সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে ছিলেন নজরুলসহ হত্যাকারীরা। ফখরুল ভাড়া ঘরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গামছা দিয়ে পা বেঁধে ফেলে এবং ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় ফখরুল মারা গেছে ভেবে মা-মেয়ে শরীরে ও ঘরে আগুন লাগিয়ে চিৎকার করতে থাকে। তাদের চিৎকার আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে গুরুতর আহত ফখরুলকে উদ্ধার করে প্রথমে জে কে মেমোরিয়াল হাসপাতাল এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ২০ অক্টোবর ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় ফখরুলের বড় ভাই বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার বলেন, ওইদিন আগুন লাগার চিৎকার ছুটে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে নজরুল ইসলামও ছিলেন। পরে উদ্ধার কার্যক্রম ও হাসপাতালে নেওয়ার ঘটনায় তার কার্যকলাপ সন্দেহজনক হওয়ায় পুলিশের বিশেষ তদন্ত করে তাকে অভিযুক্ত করে। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।‘

গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইন প্রক্রিয়া শেষে রাউজান থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরএম/বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm