কর্মবিরতির জের ধরে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সব শাখার কার্যক্রম কার্যত অচল হয়ে গেছে।

আগে থেকে কোনো ঘোষণা ছাড়াই মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিভিন্ন দাবিতে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা একযোগে কাজ বন্ধ রাখেন। এতে ব্যাংকে লেনদেনের সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়। গ্রাহকরা এসে খালি হাতেই ফিরে যান।
জানা গেছে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকে কর্মবিরতি পালন করা কর্মকর্তাদের মূল দাবি দুটি। এর একটি বিশেষ মূল্যায়নের নামে ভূয়া ও অযৌক্তিক পরীক্ষা বাতিল করা এবং বিনা কারণ ও বিনা নোটিশে কাউকে চাকরিচ্যুত না করা।
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রতি এছাড়া আরও যেসব দাবি ওঠে এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে— ক্যাম্পেইন, ডিপোজিট ও একাউন্ট বাড়ানোর নামে এমপ্লয়ীদের দিয়ে ওয়াকফ্, মোহর ও নানা একাউন্ট করানো বন্ধ করা, বিভিন্ন সময় নানা কাজের বাহানা দিয়ে এমপ্লয়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, বছরের ১৫ দিন ক্যাজুয়েল লিভ নেওয়ার সময় ম্যানেজার ও ম্যানেজার অপারেশনদের গড়িমসি বন্ধ করা, প্রতি বছর ব্যাংকের মুনাফার ওপর এমপ্লয়ীদের ইনসেনটিভ দেওয়া হয় সেটা চালু করা, চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি বিনা নোটিশে ৫৪৫ জন চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাকে পুর্নবহাল করা, ৫ আগস্টের পর প্রতিটি শাখার কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার বন্ধ করা, নানা রিপোর্ট চাওয়ার নামে হেড অফিসের ভন্ডামি ও মানসিক টর্চার বন্ধ করা, বছরের সব বোনাস ও নানা সুযোগ সুবিধা শতভাগ নিশ্চিতকরণে মানবসম্পদ বিভাগকে নতুন সার্কুলার প্রণয়ন করা।

জানা গেছে, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ প্রায় তিন হাজার স্থায়ী কর্মকর্তার কাছ থেকে নতুন করে মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি আড়াই ঘন্টার এই পরীক্ষা দেশের মোট ১০টি জোনে নির্ধারিত কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নর্থ ও সাউথ জোনের কর্মকর্তাদের পরীক্ষা হবে চট্টগ্রাম নগরীর জুবিলী রোডের মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল ও কলেজে। ১০০ নম্বরের ২০টি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ন্যূনতম ৪৫ নম্বর পেতে হবে।
এদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা বিশেষ মূল্যায়ন পরীক্ষার জন্য মনোনীত হয়েছিলেন, তাদেরকে গণহারে ছাঁটাই করার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ।
এদিকে সকালে ঢাকায় ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে কর্মবিরতি পালনকারী কর্মকর্তাদের তোপের মুখে পড়েন ব্যাংকের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) সিরাজুল ইসলাম। তিনি এ সময় কর্মকর্তাদের কাজে ফিরে যেতে বললেও কর্মকর্তারা কর্মবিরতি অব্যাহত রাখেন।