স্বামী চট্টগ্রামে চাকরি করেন। ঝালকাঠির ঘরে স্ত্রী একা থাকেন। এই সুযোগটিই নিয়েছিলেন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তাকে ধর্ষণচেষ্টা করেন ওই এসআই। নিজের সম্ভ্রম বাঁচাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এসআই আলমগীরকে কুপিয়ে রক্ষা পান তিনি। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও রেখে দেন ওই নারী।
গত সোমবার (৪ এপ্রিল) রাতে এমন ঘটনা ঘটেছে ঝালকাঠিতে কাঁঠালিয়ার পাটিখালঘাটা ইউনিয়নে। সেখানকার তাঁরাবুনিয়া পুলিশ ক্যাম্পের এসআই আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ করেছেন ওই গৃহবধূ। আহত এসআই অজ্ঞাত স্থানে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, তাকে ঘরে একা পেয়ে ধর্ষণচেষ্টা করলে তিনি পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে আহত করে ৯৯৯ এ ফোন করেন। খবর পেয়ে কাঁঠালিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই এসআই আলমগীর ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এ ব্যাপারে তিনি থানায় অভিযোগ করতে চাইলে পুলিশ আগে মেডিকেলে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে আসতে বলে।
উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শাহিন হাওলাদার জানান, তারাবুনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এলাকায় ভুক্তভোগী ওই নারীর ভগ্নিপতির একটি চায়ের দোকান আছে। ভগ্নিপতির দোকানে মাঝেমধ্যে যাতায়াতের ফলে ওই নারীর পরিচয় হয় এসআই আলমগীরের সঙ্গে। আলমগীর তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় টাকা ধারও নিয়েছেন।
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক সনাতন চন্দ্র জানান, সোমবার রাত ১টার দিকে কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে এসআই আলমগীর আহত অবস্থায় তার কাছে যান। তার বাম পায়ের হাঁটুর উপরিভাগে কয়েকটি জখমের চিহ্ন ছিল। সেখান থেকে রক্ত ঝরছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তারা চলে যান।
এদিকে ভুক্তভোগী ওই নারী অভিযোগ করেন, ‘বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। লোক পাঠিয়ে আমাকে চাপ দেওয়া হচ্ছে, আমি মামলা করলে পুলিশও আমার বিরুদ্ধে মামলা করবে। আমি বোনের বাসায় আছি। এ ঘটনার বিচার চাই। আমার কাছ থেকে ধার নেওয়া টাকাও ফেরত দেওয়ার দাবি জানাই।’
কাঁঠালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুরাদ আলী সাংবাদিকদের জানান, গত সোমবার রাত ৮টার দিকে ওই নারী ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে জানায়, তাকে ধর্ষণচেষ্টা করা হয়েছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছি। তখন গৃহবধূ জানায়, তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণচেষ্টা করায় কুপিয়ে আহত করে এসআই আলমগীরের মোবাইল রেখে দেওয়া হয়েছে। যদিও মোবাইলটি সে দেখাতে পারেনি। ঘটনাস্থলে গিয়ে এসআই আলমগীরকে পায়নি কাঁঠালিয়া থানা পুলিশ।
ওসি মুরাদ আলী আরও বলেন, আমি রাতেই ওই মহিলাকে বলেছি সকালে ঝালকাঠি গিয়ে মেডিকেল করিয়ে কাঁঠালিয়া থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করতে। বুধবার বিকাল পর্যন্ত তিনি কোনো অভিযোগ করেনি। এসআই আলমগীরের সঙ্গে ঘটনার পর থেকে দেখা বা কথা হয়নি বলেও তিনি জানান।
সিপি