স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে কোলের শিশু নির্দয়ভাবে পেটালো মা

বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার বিষয় নিয়ে স্বামীর সাথে ঝগড়ার জেরে নিজের দুই বছরের কোলের শিশুকে নির্দয়ভাবে পেটালো এক মা। ওই শিশুকে কখনও চড়, কখনও বেত দিয়ে নির্মমভাবে পেটালেন তিনি। অবুঝ শিশুর আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে উদ্ধার করায় প্রাণে রক্ষা পায় শিশুটি।

পরে সারা শরীরের আঘাতের চিহ্ন নিয়ে গুরুতর আহত শিশুটিকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয়রা। বর্তমানে শিশুটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদপুর গ্রামে এই অমানবিক ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মুহাম্মদ কামাল উদ্দিন (৩৫) তার স্ত্রী সুমি আক্তারকে (২৬) বাপের বাড়িতে থেকে টাকা আনতে চাপ দেয়। স্ত্রী বার বার বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে পারবে না জানালে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি ও পরে ঝগড়াঝাটি হয়। এক পর্যায়ে কামাল উদ্দিন বাইরে চলে গেলে ক্ষুধার্ত শিশুটি দুধ খেতে মাকে জড়িয়ে ধরে। এ সময় ওই শিশুর মাথার চুল ধরে উপরে ঝুলিয়ে রাখেন মা সুমি আক্তার৷ এরপরও শিশুটি দুধ খাওয়ার জন্য ছটফট করলে মা প্রথমে চড়-থাপ্পর মারেন, পরে বেত দিয়ে নির্মমভাবে পেটাতে শুরু করেন। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে সুমি আক্তারকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলেও শিশুটিকে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি কেউ। পরে শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে এলাকাবাসী শিশুটিকে উদ্ধার করে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। মাত্র দুই বছরের অবুঝ শিশুর উপর গর্ভধারিণী মায়ের অমানবিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। তারা পাষণ্ড মায়ের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুহাম্মদ বদিউল আলম আজিজ বলেন, প্রায় প্রতিদিন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঠুনকো বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটি ও মারপিটের ঘটনা ঘটছে। এসব না করতে বহুবার তাদের অনুরোধ করেছি। শিশুকে মারধরের বিষয়টি আমি স্থানীয় লোকজনের কাছে শুনেছি। ঘটনা সত্য এবং শিশুটির পিঠে প্রচন্ড মারধরের চিহ্ন দেখা যায়। অবুঝ শিশুকে মা কোনোদিন এভাবে মারতে পারেনা। ওই মহিলার কোনও মানসিক সমস্যা আছে কি না দেখা দরকার।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রায়হানুল ইসলাম বলেন, কোন মা নিজের সন্তানকে এভাবে নির্যাতন করতে পারে তা কখনও দেখিনি। শিশুটির চিকিৎসা চলছে।

এসএ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!