স্বামীর পরকীয়ার বলি চট্টগ্রামের গৃহবধূ, স্বজনরা বলছেন খুন

স্বামীর পরকীয়ার জের ধরে সাজেদা আকতার (৩২) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে উপজেলার চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড এলাকায় নিজের ঘরে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় স্বামী আমির হোসেন (৩৫) কে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন নিহতের বড় ভাই জসিম উদ্দিন। আমির হোসেন একই এলাকার মৃত আবদুল মালেক পুত্র। পেশায় একজন পালিশ মিস্ত্রী।

শনিবার দুপুর ২টার দিকে নিজ ঘর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে পটিয়া উপজেলার মেহেআটি গ্রামের মৃত মকবুল হকের মেয়ে। তার ১১ বছরের একটি মেয়ে ও ৯ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। ২০০৮ সালে পারিবারিক ভাবে মৃত আবদুল মালেক পুত্র আমির হোসেনের বিয়ে হয় তার।

নিহতের বড় বোন রাশেদা বেগম (৪০) জানান, ২০০৮ সালে পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় আমার ছোট বোন জাহেদা। বিয়ের তিন বছর পর্যন্ত তাদের সংসার সুন্দরভাবেই চলছিলো। এরপর থেকে তার স্বামীর নির্যাতন শুরু হয়। বিভিন্ন সময়ে আমাদের বললেও আমরা তাকে সান্ত্বনা দিতাম। সে স্থানীয় একটি কারখানায় চাকরিতেও যোগ দেয় সংসারের অভাব দূর করতে। তবু প্রায় সময় তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি লেগে থাকত।

তিনি বলেন, শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে জাহেদা আমাকে ফোন করে বলে— চাকরি থেকে চলে এসেছি, আমাকে আমির মারধর করছে খুব। আর বিকালে শুনি সে নাকি আত্মহত্যা করছে। আমার বোন আত্মহত্যা করতে পারে না। তাকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় আমার ভাই জসিম উদ্দিন বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় মামলা করেছেন। আমি আমার বোনের হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে তার বিচারের দাবি জানাই।

মামলার বাদী জসিম উদ্দিন জানান, আমির হোসেন কয়েক বছর ধরে বেশ কয়েকজন নারীর সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। এগুলো নিয়ে একাধিকবার সামাজিক বৈঠকও হয়েছে স্থানীয় মেম্বারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিয়ে। আমার বোনের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে গত মাসেও একটি সামাজিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সে বৈঠকে আসেনি। গতকাল রাতেও সে আমার বোনকে মারধর করে। তার শরীরে নির্যাতনের আঘাত রয়েছে। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছি।

স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্যা কামরুন্নাহার বেগম জানান, চাকরি ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন সময় মারধরের ঘটনাও ঘটেছে।

কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল মাহমুদ জানান, এ ঘটনায় থানায় নিহতের স্বামী আমির হোসেনকে আসামি করে থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার দায়ে ৩০৬ ধারার মামলা করেছে নিহতের বড় ভাই জসিম উদ্দিন। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!