চট্টগ্রাম কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে যেন নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলো সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মেসার্স এসজিএস কোম্পানি। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর বাতিল করা হয়েছে ওই এজেন্টের লাইসেন্স।
চট্টগ্রামের কদমতলীর এমএফ টাওয়ারের নিচ তলায় অবস্থিত এসজিএস কোম্পানি। এর মালিক হচ্ছেন মোহাম্মদ আবু সাইদ বকুল।
জানা গেছে, ঢাকার কোতোয়ালী থানার বীরেন বোস স্ট্রিটের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজান ট্রেডার্স কোরিয়া থেকে এইচডিডিই গ্রেড এমএফ ৫০০ ঘোষণায় ছয় কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য খালাসের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয় সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসজিএস কোম্পানিকে।
উক্ত সিএন্ডএফ এজেন্ট গত ১৭ ডিসেম্বর বিল অব এন্ট্রি (সি নং ১৭৫৮২৫৬) দাখিল করেন। উক্ত চালানে আমদানিকারক, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, জেটি সরকার যোগসাজসে আনস্টাফিং কর্মকর্তার (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার) স্বাক্ষর জাল করে ৬ কনটেইনার পণ্য পাচারের চেষ্টা করেন।
পণ্যগুলো ট্রাকে তুলে বন্দরের এমপিবি গেইট পাস হওয়ার সময় বন্দর নিরাপত্তা প্রহরীদের সন্দেহ হয়। এ সময় সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তার স্বাক্ষর খতিয়ে দেখলে তাতে জাল স্বাক্ষর পাওয়া যায়।
ওই সময় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের জেটি সরকার ওমর ফারুক ফরহাদ স্বাক্ষর জাল করার কথা স্বীকার করেন কাস্টমস কর্মকর্তাদের কাছে। পরে উক্ত ঘটনায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত করে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। কারণ দর্শানো হয় ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাইদ বকুলকেও।
কাস্টমস আইনে বলা আছে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে কাস্টমস এজেন্টস (লাইসেন্সিং) বিধিমালা-২০১৬ এর বিধি ১৪ মতে দায়িত্ব ও কর্তব্যের পরিপন্থী, যা শাস্তিযোগ্য ও লাইসেন্স বাতিলযোগ্য অপরাধ। এ আইনের ভিত্তিতে রবিবার (৩১ জানুয়ারি) বাতিল হলো এসজিএস কোম্পানির লাইসেন্স।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, চালানটি আটকের পর জেটি সরকার ওমর ফারুক ফরহাদ স্বাক্ষর জালের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এসজিএস কোম্পানির ব্যবস্থাপক আবদুল কাইয়ুমও তার লিখিত বক্তব্যে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ-কমিশনার সুলতান মাহমুদ চট্টগ্রাম প্রতিদিন বলেন, ‘বিধিমালা ভঙ্গের দায়ে সরকারি রাজস্ব সুরক্ষার স্বার্থে এসজিএস কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এর আগে বিধিভঙ্গের দায়ে লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়েছি। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে উত্তর দিতে বলা হয়েছিল। সরকারি সব বিধি বিধান মেনেই উক্ত সিএন্ডএফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলো। ’
এসজিএসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সাইদ বকুল বলেন, ‘জেটি সরকার কেন স্বাক্ষর জাল করল সেটা বুঝতে পারছি না। জেটি সরকার পলাতক রয়েছে। তবে, পণ্যের ঘোষণার সঙ্গে কোন ধরনের গরমিল ছিল না। মিথ্যা ঘোষণার কিছুই ছিল না।’
এএস/কেএস