সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরান ফাতেমা ও মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের সব ধরনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগ।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এই নির্দেশ সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে দিয়েছে। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে হাছান মাহমুদকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। দেশ ছেড়ে পালানোর সময় তিনি ঢাকা বিমানবন্দরে আটক হন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কর্তৃপক্ষ এর সত্যতা নিশ্চিত করেনি এখন পর্যন্ত।
এর আগে রোববার (৪ আগস্ট) রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের পরিবারের সদস্যরা ইকে ৫৮৬ নম্বর ফ্লাইটযোগে দেশ ছাড়েন। তাদের গন্তব্য ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই বিমানবন্দর। তবে তার পরিবারের সদস্যরা অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে থাকেন।
হাছান মাহমুদ বিতর্কিত নির্বাচনে চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম-৭) থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য মনোনীত হন।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) নির্দেশে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, তার স্ত্রী নুরান ফাতেমা এবং মেয়ে নাফিসা জুমাইনা মাহমুদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়ী হিসাব জব্দ করতে হবে। ২০১২ সালের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা বিভাগের এই নির্দেশনার ফলে ওই তিনজনের ব্যক্তিগত কিংবা ব্যবসায়িক ব্যাংক হিসাব থেকে কোনো টাকা তোলা যাবে না।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনের পর হাছান মাহমুদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এর আগে তিনি তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
মন্ত্রী থাকাকালে হাছান মাহমুদ দুবাই, অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়ামসহ কয়েকটি দেশে বিপুল পরিমাণ টাকা পাচার করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে খবর বেরিয়েছিল। তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে তার নির্দেশে চট্টগ্রাম প্রতিদিনসহ ভিন্নমতের বহু সংবাদপত্র ও অনলাইন একাধিকবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তার সময়ে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও পেশাগত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা অবর্ণনীয় হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। গত দেড় বছরে অন্তত ২০০ জন সাংবাদিককে নির্যাতন ও হয়রানি করা হয়েছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়। এজন্য প্রধানত হাছান মাহমুদকে দায়ী করা হয়ে থাকে। এ সময়ে বিশ্ব সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দাঁড়ায় ১৬৫তম স্থানে।
গত ১৫ বছর ধরে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় তার নির্বাচনী এলাকায় বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-নির্যাতন, মামলা দিয়ে তাদের হয়রানি করে চরম ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন হাছান মাহমুদ।
সিপি