সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে কাজ করছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
ভাটিয়ারিতে সেনাবাহিনীর ৭৭তম বিএমএ কোর্স সমাপ্তি অনুষ্ঠান
অবকাঠামোগত, কৌশলগত এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে যুগোপযোগী এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির (বিএমএ) প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭৭তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের প্রশিক্ষণ সমাপ্তি ও অফিসার ক্যাডেটদের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অবকাঠামোগত, কৌশলগত এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত, স্বয়ংসম্পূর্ণ, চৌকস এবং পেশাগতভাবে দক্ষ। আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে যুগোপযোগী এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে চাই।’
জাতির পিতার দেখানো স্বপ্নেই সেনাবাহিনীর মান উন্নয়নে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে সামরিক বাহিনীর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে একটি প্রশিক্ষিত, শক্তিশালী ও দক্ষ সেনাবাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৭৪ সালে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কুমিল্লা সেনানিবাসে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির শুভ উদ্বোধন করেন, যা ছিল বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
জাতির পিতার ১৯৭৪ সালে প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকেই সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য আমরা ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করেছি। এর আওতায় আমাদের সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নতুন নতুন পদাতিক ডিভিশন, ব্রিগেড, ইউনিট ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। আমাদের সরকার বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ২০০০ সালে সর্বপ্রথম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে মহিলা অফিসার নিয়োগ এবং ২০১৩ সালে সর্বপ্রথম মহিলা সৈনিক ভর্তির যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন এবং অভিবাদন গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি কৃতি ক্যাডেটটের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ২৩৪ জন বাংলাদেশি, ২৯ জন সৌদি, একজন ফিলিস্তিনি, একজন শ্রীলঙ্কানসহ মোট ২৬৫জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন।
ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার সাবির নেওয়াজ শাওন ৭৭তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদি কোর্সে সেরা চৌকস ক্যাডেট হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে গৌরবজনক ‘সোর্ড অব অনার’ গ্রহণ করেন। এছাড়া কোম্পানি সিনিয়র আন্ডার অফিসার মো. বরকত হোসেন সামরিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য ‘সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক’ অর্জন করেন।
পরে ক্যাডেটরা আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাবা-মা ও অভিভাবকেরা নবীন কর্মকর্তাদের র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন। কমিশনপ্রাপ্তদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
এআরটি/এসএস