সেই মোরশেদ খানও স্ত্রীসহ আক্রান্ত, করোনা থেকে বাঁচতে বিমান ভাড়া করে গিয়েছিলেন লন্ডনে

বাংলাদেশে যখন করোনাভাইরাসের আতঙ্ক চারদিকে, ২৮ মে পুরো বিমান ভাড়া করে দেশ ছেড়ে লন্ডনে চলে যান সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী। কিন্তু লন্ডনে গিয়েও শেষমেশ করোনা থেকে বাঁচতে পারলেন না তারা। লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপি সরকারের সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও তার স্ত্রী নাসরিন খান দুজনেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন এক সপ্তাহ আগে।

বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) রাত পর্যন্ত পাওয়া সবশেষ খবরে নাসরিন খানের অবস্থা আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য অত্যন্ত সঙ্কাটপন্ন বলে মনে করছেন সেখানকার চিকিৎসকরা। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আগেই আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

মোরশেদ খানের ছেলে ফয়সাল মোরশেদ খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করা আমার বাবা ও মা দুজনেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মায়ের শারীরিক অবস্থা আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য অত্যন্ত সঙ্কাটপন্ন বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।’

জানা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি থেকে এম মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী নাসরিন খান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নাসরিন খান ফুসফুস শতকরা ৫০ ভাগ সচল এবং অক্সিজেন লেভেল শতকরা ৭০ ভাগের মধ্যে ওঠানামা করছে।

গত বছরের ২৮ মে পুরো বিমান ভাড়া করে চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশ ছেড়ে লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী। পুরো বিমানে যাত্রী হিসেবে শুধু এই দুজনই ছিলেন। মোরশেদ খানের ছেলে ফয়সাল মোরশেদ খান সপরিবারে লন্ডনে বসবাস করেন।

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী-চান্দগাঁও আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন মোরশেদ খান।

এর আগে গত বছরের ১০ জুন সাবেক এম মোরশেদ খানের বিদেশ যাওয়া ঠেকাতে বিমানবন্দরের বহির্গমন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তারও আগে ২০১৭ সালের ২৮ জুন মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী নাসরিন খানকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।

দুদকের উপপরিচালক মো. সামছুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে সে সময় বলা হয়, এম মোরশেদ খান সপরিবারে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার বিদেশ যাওয়া ঠেকানো দরকার।

টেলিকমিউনিকেশন ব্যবসা সম্প্রসারণের নামে এবি ব্যাংকের প্রায় ৪০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৭ সালের ২৮ জুন দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার বনানী থানায় মোরশেদ খানসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করে। অন্য আসামিরা এবি ব্যাংক ও টেলি কোম্পানিটির সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা।

মামলার তথ্য অনুসারে, মোরশেদ খান এবি ব্যাংকের পরিচালক থাকাকালে তার কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য ওই ব্যাংককে গ্যারান্টার (জামিনদার) করে আটটি বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২০১১ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে মোট ৩৪৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। সময়মতো পরিশোধ না করায় তা সুদে-আসলে ৩৮৩ কোটি ২২ লাখ ১০ হাজার টাকা দাঁড়ায়। ঋণদাতা আট প্রতিষ্ঠানকে সমুদয় টাকা পরিশোধ করে এবি ব্যাংক মহাখালী শাখা।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!