সেই ‘ত্রিপুরা পল্লী’র বেহাল দশা এখন, ফিরেও তাকাচ্ছে না প্রশাসন

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ও ধলই ইউনিয়নের পশ্চিমে জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত দুর্গম পাহাড়ি এলাকা মনাই ত্রিপুরা পল্লী। ষাটের বেশী পরিবারের বসবাস এই ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকারি সুবিধাসমূহ পৌঁছে দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ রুহুল আমীন। তবে তাঁর বদলির পর এই পল্লীতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি সেবা বন্ধ হয়ে গেছে।

মনাই ত্রিপুরা পল্লীতে বসবাসরতদের সূত্রে জানা গেছে, এক সময়র দুর্গম পাহাড়ি মনাই ত্রিপুরা পল্লীতে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিনের হাত ধরে ২০১৮ সালে শিক্ষা সহ উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে৷ শিশুদের শিক্ষার নির্মাণ, মেধাবীদের জন্য চালু করা হয়েছিল শিক্ষা বৃত্তি।

বিনামূল্যে ইউনিফর্মসহ যাবতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার উদ্যোগ নেন তিনি। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত, টিউবওয়েল বসানো ও মন্দির নির্মাণসহ নানা ধরণের উন্নয়ন করেন।

ফলে এক সময়ের দূর্গম এলাকাকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ প্রোগ্রামের আওতায় এনে জেলা পর্যায়ের সাধারণ (প্রাতিষ্ঠানিক) ক্যাটাগরিতে ‘জনপ্রশাসন পদক ২০২০’ জিতে নেয় হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়। রুহুল আমিনের বদলিজনিত কারণে পদক গ্রহণ করেন হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (চলিত দায়িত্ব) মো.শাহিদুল আলম।

তবে ২০২১ সালের ১১ জুলাই রুহুল আমিনের বদলির পর বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন ত্রিপুরাবাসীরা। বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারি সেবা।

পল্লীর বাসিন্দা বিষলক্ষী ও রসন্তী ত্রিপুরা বলেন, আমরা ভালো করে বাংলা ভাষায় কথা না পারায় সবকিছু বুঝিয়ে বলতে পারিনা। আমাদের পল্লীতে কষ্টের সীমা নেই। আগের ইউএনও স্যার খবর নিতেন। এখন আর কেউ আমাদের খবর নেয় না। কয়েক মাস হলো বাচ্চাদের পড়ালেখার স্কুল বন্ধ হয়ে গেছে। পল্লীতে পানির সংকট রয়েছে। আমরা চাই দ্রুত বাচ্চাদের স্কুল খুলে দেওয়া হোক।

Yakub Group

মনাই ত্রিপুরা পাড়ার সভাপতি সচিন ত্রিপুরা বলেন, মনাই ত্রিপুরা পল্লী পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় অবস্থিত। কয়েক বছর আগে হাম রোগে বাচ্চা মারা যাওয়ার পর এলাকাটি প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের নজরে আসে। সাবেক নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন স্যারের মাধ্যমে শুরু হয় আমাদের এই পাড়ার উন্নয়ন। এ দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় রাস্তা করে দেন তিনি। তিনি সেমিপাকা ঘর, টিউবওয়েল, টয়লেট, বিদুৎ, মন্দির ও শিক্ষা ব্যবস্থার সুযোগ করে দেন। কিন্তু কয়েক মাস হলো কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অদৃশ্য কারণে বন্ধ হয়ে যায়। কেউ আমাদের খোঁজ নেয় না। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালুসহ সব ধরণের সংকট দূর করার দাবী জানাচ্ছি।

হাটহাজারী উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার আবু রায়হান বলেন, মনাই ত্রিপুরা স্কুল শিক্ষকের বেতন চলতো মন্দির ভিত্তিক গণশিক্ষা কার্যক্রম থেকে। করোনার পর বেতন বন্ধ থাকায় স্কুলে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে খোঁজ খবর নিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!