বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সড়কবাতি নেভানো-কাণ্ডে বিতর্কিত প্রকৈাশলী ঝুলন কুমার দাশকে অবশেষে চকরি থেকে অপসারণ (সাময়িক বরখাস্ত) করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। নিয়ম আনুযায়ী ৯০ দিনের বেতন পাবেন তিনি।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। সিটি কর্পোরেশন কর্মচারি চাকরি বিধিমালা, ২০১৯, এর ৬৪(২) ধারা প্রদত্ত ক্ষমতা বলে জনস্বার্থে প্রকৈাশলী ঝুলন কুমার দাশকে অপসারণ করা হয়েছে বলে অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয়। ১৫ ডিসেম্বর থেকে এ আদেশ কার্যকর হবে বলেও জানানো হয়।
এর আগে জুলাইয়ে ছাত্রদের আন্দোলন চলাকালে সড়কবাতি বন্ধের অভিযোগ তুলে প্রকৌশলী ঝুলন কুমার দাশের পদত্যাগ দাবিতে ১৩ আগস্ট সিটি কর্পোরেশন কার্যালয় ঘেরাও করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে পরদিন ১৪ আগস্ট ঝুলন কুমার দাশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এছাড়া ঘটনার তদন্তে প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
২৬ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের এক আদেশে ‘বরখাস্তাদেশ’ মাথায় নিয়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশনে বদলি হন ওই কর্মকর্তা। ২৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম থেকে ‘মুক্ত’ হয়ে নতুন কর্মস্থল রংপুর সিটি কর্পোরেশনে যোগ দেন তিনি।
গত ১৫ অক্টোবর এ কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে সড়কবাতি নেভানো-কাণ্ডে ঝুলন দাশের সম্পৃক্ততা আছে উল্লেখ করে তিনটি সুপারিশ করা হয়।
এদিকে গত ৮ ডিসেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের অপর এক আদেশে প্রকৌশলী ঝুলন দাশকে রংপুর সিটি কর্পোরেশন থেকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে বদলি করা হয়। পৃথক আরেকটি আদেশে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি কর্পোরেশন-২ শাখার উপসচিব খোন্দকার ফরহাদ আহমদ।
বদলি আদেশ পেয়ে ঝুলন দাশের যোগদান নিয়ে ‘হার্ডলাইনে’ থাকার ঘোষণা দেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিতর্কিত প্রকৌশলী ঝুলন দাশকে কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না বলে গণমাধ্যমকে জানান তিনি।
পরে বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) তাকে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে যোগদান করানো হলেও দেওয়া হয়নি কোনো দায়িত্ব। তখন সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ঝুলন দাশের যোগদানকে ‘শাস্তি’ হিসেবে ধরা হয়েছে।
সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘ঝুলন বাবুর নিয়োগ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন থেকে। তাই তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিলে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকেই নিতে হবে।’
ফলে রোববার (১৫ ডিসেম্বর) অপসারণ আদেশের মাধ্যমে সড়কবাতি নেভানো-কাণ্ডে ঝুলন কুমার দাশের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করলো চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন।
এনইউএস/ডিজে