সৃজনকর্মের স্রষ্টাকে মূল্যায়ন করতে হয় দেহনাশের আগেই

সৃজনকর্মের স্রষ্টাকে মূল্যায়ন করতে হয় দেহনাশের আগেই। আইনের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক হলেও সব মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক নয়। এক্ষেত্রে বড় সমস্যা হয় মানুষের মেধাসম্পদ রক্ষণে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) শংকর রঞ্জন সাহা।

সৃজনশীল মানুষের সৃষ্টিশীল কাজের মূল্যায়ন এবং গ্রন্থস্বত্বের ক্ষেত্রে কপিরাইট আইনের আওতায় এনে মেধাশক্তির রক্ষণ, উন্নয়ন, সৃজনশীল কর্মে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে (২৮ সেপ্টেম্বর) শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর জেলা শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামে ‘কপিরাইট আইনে মেধাসম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইট জাফর রাজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে দিলরুবা খানমের উপস্থাপনায় আয়োজিত সেমিনারে গবেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক খান মাহবুব কপিরাইট আইনে মেধা সম্পদ সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। উপস্থাপিত প্রবন্ধের ওপরে আলোচনা করেন কবি ও কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু।

সৃজনশীলতা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে যে মেধাসম্পদ সৃজিত হয় তার আইনগত স্বীকৃতি ও সুরক্ষার প্রয়োজনেই কপিরাইট আইন। মেধাসম্পদের অবৈধ ব্যবহার এবং অপব্যবহার ক্ষেত্রে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানান বক্তারা।

কবি ও কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, ‘মেধাসম্পদ সুরক্ষার মাধ্যমে দক্ষ ও মেধাবী জাতি বিনির্মাণ সম্ভব এবং আমাদের সকলেকেই সেই পথেই হাটতে হবে।’

গবেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধ্যয়ন বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষক খান মাহবুব বলেন, ‘দুনিয়াতে সবচেয়ে বেশি চুরি হয় আইডিয়া। তবে সৃজনশীল মানুষ সৃজনকর্মের প্রতি যতটা মগ্ন থাকে ততটা আন্তরিক থাকে না সৃজিত উপকরণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি অর্থ উপার্জনে। আবার এই সৃজনশীল মানুষের যথাযথ সম্মানীও প্রদান করে না বাজারজাতকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান। তাই এক্ষেত্রে আইন এবং আইনের প্রয়োগ সৃজনকর্মের দীর্ঘমেয়াদি অর্থ অর্জনে মূল নিয়ামকের ভূমিকায় থাকতে পারে।’

রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইট জাফর রাজা চৌধুরী কপিরাইট আইনের ব্যবহার এবং আইনের প্রয়োগ সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘কপিরাইট আইনের মাধ্যমে মেধা সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত শুধু দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক প্রাপ্তি নয়। বিষয়টির সঙ্গে আমাদের মানবিক ও নৈতিক দিকটিও জড়িয়ে আছে।’

সেমিনারে বক্তব্য শেষে বক্তারা উপস্থিত দর্শক এবং শিল্পীদের সাথে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন।

এসআর/সিপি