সুলতান ডাইনে ‘কুকুরের মাংসের’ গুজব, ব্যবসায় ধস চট্টগ্রামেও

ঢাকার সুলতান ডাইন রেস্টুরেন্টের ধানমন্ডি শাখায় কাচ্চিতে কুকুরের মাংস দেওয়ায় অভিযোগ তুলেছেন এক ক্রেতা। যদিও এই অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে এখনও প্রমাণিত হয়নি। কিন্তু এর প্রভাব পড়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবসায়। একদিনের ব্যবধানে বিক্রি অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে দেশের ১১টি শাখায়।

এই বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে নানান ঠাট্টা-সমালোচনার ঝড়। তবে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর সুলতান ডাইনের ওই আউটলেটে অভিযান চালালেও এখনও কোনো ধরনের প্রতিবেদন দেয়নি।

তবে সুলতান ডাইন কর্তৃপক্ষ এটিকে ‘নোংরা ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ বলছেন। তারা ক্রেতাদের তাদের প্রতি আস্থা রাখার বার্তা দিচ্ছেন।

s alam president – mobile

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সুলতান ডাইনের দুটি শাখার একটি ২ নম্বর গেটে, অপরটি আগ্রাবাদে।

বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) দুপুর আড়াইটায় আগ্রাবাদের সুলতান ডাইনে গিয়ে দেখা গেছে, শুধুমাত্র একজন মহিলা ক্রেতা খেতে বসেছেন। তবে গতকালের ঘটনায় যে ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে, তা অকপটে স্বীকার করে নেন ব্রাঞ্চ ম্যানেজার মো. আউয়াল।

এই বিষয়ে মো. আউয়াল, ‘গতকালের ঘটনায় ব্যবসায় প্রভাব পড়াটা খুব স্বাভাবিক। আমরা সমস্যাটা দ্রুত কাটিয়ে আবারো ব্যবসায় ফিরতে পারবো। তবে অন্যদিনের তুলনায় বৃহস্পতিবার আমাদের বিক্রি কম। তবে আমাদের ক্রেতারা আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারেন, আমরা তাদের বিশ্বাস কখনোই নষ্ট করবো না।’

Yakub Group

ঢাকার ধানমন্ডি ব্রাঞ্চ থেকে কাচ্চি পার্সেল অর্ডার করেন কনক রহমান খান নামের এক ক্রেতা। তিনি খাবার খেতে গিয়ে সন্দেহ করেন, তাকে ছাগলের বদলে বিড়াল বা কুকুরের মাংস দেওয়া হয়েছে। এমন অভিযোগে তাৎক্ষণিক ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন তিনি। পরে যা ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়।

সেই ইস্যুকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সারাদিন নানান চটকদার স্ট্যাটাস দিচ্ছেন ভোজন রসিকরা। তবে কেউ এটাকে নিছক ষড়যন্ত্র বলে দাবি করছেন। আবার কেউ বলছেন, ব্যবসায় লাভের জন্য এমনটা করতেও পারে তারা। এমনই মিশ্র প্রতিক্রিয়াতে সরব রয়েছে ফেসবুকের টাইমলাইন।

সুলতান ডাইন আগ্রাবাদ শাখার ফেসবুক পেইজ থেকে একটি পোস্ট করা হয় কাচ্চির বিষয়ে। সেখানে এসে নাজমুল হোসাইন মামুন নামের একজন লিখেছেন, ‘ভাই আপনাদের কুত্তা বিরিয়ানী কত করে?’

মাসুদ বিল্লা নামের আরও একজন লিখেছেন, ‘আপনাদের ওখানে জার্মান শেফার্ড কাচ্চি হবে?’ এমন সব নেতিবাচক কমেন্টে ভর্তি ছিলো সুলতান ডাইনের সেই পোস্টটি।

তবে এর পেছনে ব্যবসায়িক নোংরা প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে কারণ হিসেবে দেখছে সুলতান ডাইন কর্তৃপক্ষ। কারও নাম সরাসরি উল্লেখ না করলেও সমপর্যায়ে থাকা আরেকটি কাচ্চি রেষ্টুরেন্টের দিকে আঙুল তুলে তারা বলেন, ব্যবসায়িকভাবে আমাদের ঘায়েল করতে এটা পরিকল্পিত মিথ্যাচার ও গুজব। আমরা দ্রুত এর পাল্টা জবাব দেবো।

এদিকে এই ঘটনায় ধানমন্ডির সেই শাখাতে বৃহস্পতিবার (৯মার্চ) অভিযান চালায় নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর। তবে এখনও পর্যন্ত সেই অভিযানের অফিসিয়ালি কোনো প্রতিবেদন দেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সারাদেশে সুলতান ডাইনের ১১টি শাখা রয়েছে। এরমধ্যে শুক্রবার সাভারে আরও একটি এবং চলতি মাসে কেরানীগঞ্জে আরেকটি শাখার উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে।

বিএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!