সুজনের ১৩ দুর্নীতির তদন্তে এবার মন্ত্রণালয় স্বয়ং, উচ্চপর্যায়ের কমিটি

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধেই ‘জিহাদ’ ঘোষণা করেছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। সেই ১৮০ দিনের দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধেই উঠেছে সুনির্দিষ্ট ১৩টি দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ। এবার দুর্নীতিগুলো বিশদভাবে তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ। এর আগে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনও সুজনের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করে।

মঙ্গলবার (২৪ মে) খোরশেদ আলম সুজনের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করতে একজন অতিরিক্ত সচিবকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন তার ১৮০ দিনের দায়িত্ব পালনকালে ১৩ সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির বিষয় (দুর্নীতি দমন কমিশন কর্তৃক প্রেরিত) তদন্তের জন্য নির্দেশক্রমে নিম্নলিখিত রূপে কমিটি গঠন করা হল।’

উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (নগর উন্নয়ন) মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী। সদস্য হিসেবে রয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্মসচিব (পলিসি সাপোর্ট অধিশাখা) নুমেরী জামান। আর তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব (সিটি করপোরেশন-২ শাখা) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম।

তদন্ত কমিটির কর্মপরিধি সম্পর্কে আদেশে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন তার ১৮০ দিনের দায়িত্ব পালনকালে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) কর্তৃক ১৩ সুনির্দিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তপূর্বক একটি প্রতিবেদন দাখিল করবেন।

এর আগে গত বছরের ২২ মে সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজনের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম তদন্ত করতে কমিটি গঠন করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। পাঁচ সদস্যের ওই তদন্ত কমিটিতে চসিকের প্যানেল মেয়র-২ ও বাগমনিরাম ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. গিয়াস উদ্দিনকে আহ্বায়ক এবং প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন আইন কর্মকর্তা মো. জসীম উদ্দিন, নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব কুমার দাশ ও সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন।

গত বছরের ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত চসিকের বর্তমান পর্ষদের তৃতীয় সাধারণ সভায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বরাদ্দ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

চসিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৬ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন খোরশেদ আলম সুজন। ১৮০ দিন দায়িত্ব পালন শেষে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি তার মেয়াদ শেষ হয়। ওই সময়ে নগরের বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১২টি জায়গা ১০ জনকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দ দেওয়া জায়গার মোট পরিমাণ ১৭ হাজার ১৮৮ বর্গফুট।

নগরের গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক এলাকার এসব জায়গা প্রতি বর্গফুট সর্বনিম্ন এক টাকা ৮০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ৮৫০ টাকায় মাসিক ভাড়া ধার্য করা হয়। এর মধ্যেই ড্রেন ও নালার স্ল্যাবের ওপরেও দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এতে জনচলাচলের পথে বাধা তৈরির অভিযোগ রয়েছে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!