শেখ সালাউদ্দীন,সীতাকুন্ড প্রতিনিধি :
সীতাকুন্ড উপজেলায় বর্তমানে রোপ আমন ধান এর মাঠে আলোক ফাঁদ স্থাপনের মাধ্যমে পোঁকা সনাক্ত করনের কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা কৃষি অফিস। অধিকাংশ পোকাই আলোর প্রতি সংবেদনশীল, সন্ধ্যা বেলায় আলোর ফাঁদ স্থাপন করলে আলোতে ক্ষতিকারক এবং উপকারী পোকা মাকড় আলোক ফাঁদে আসে তখন আলোক ফাঁদ স্থাপনকৃত মাঠের পোকার উপস্থিতি নির্নয়ের মাধ্যমে পোকা দমন ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
মাত্র ৩ টি খুটির মাথাকে উপরের দিকে এক সাথে বেধেঁ তার একটু নিছে লাইট অথবা চার্জ লাইট বেধেঁ নিচের দিকে বড় গামলায় সাবান মিশ্রিত পানি দিয়ে আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হয়। এতে গামলায় সাবান মিশ্রিত পানির মধ্যে ক্ষতিকারক পোকা মাকড় পড়ে মারা যায়, এতে করে পোকা দমন হয়। কৃষি অফিসার সুশান্ত সাহা’র নেতৃত্ব সার্বক্ষনিক উপজেলায় কর্মরত ২৭ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সন্ধ্যা বেলায় মাঠে আলোক ফাঁদ স্থাপনের মাধ্যমে পোঁকা সনাক্ত করন এবং পোঁকা দমনের কাজ করে যাচ্ছেন।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার সুশান্ত সাহা এবং উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষন কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র নাথ বলেন,বর্তমানে উপজেলার পোকা আক্রমন প্রবন মাঠ গুলোকে চিহ্নিত করে আলোক ফাঁদ স্থাপনের মাধ্যমে পোকার উপস্থিতি নির্নয় করা হয়। তাছাড়া এমন কিছু পোকা আছে যেমন বাদামী গাছ ফড়িং আলোর প্রতি সংবেদনশীল তাই আলোক ফাঁদ স্থাপন এর মাধ্যমে এ পোঁকার উপস্থিতি নির্নয় এবং ব্যবস্থার মাধ্যমে তাৎক্ষনিক পোকা দমন করে ফসল রক্ষা করা সম্ভব। তাই কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কৃষক পরিবারকে আলোক ফাঁদ স্থাপনের জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে এবং কৃষকদের মধ্যেও উৎসাহের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে বাড়বকুন্ড ব্লকে দায়িত্বরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সিরাজ উদ্দিন বলেন এ ব্লকে কৃষকদের মাঝে আলোক ফাঁদ স্থাপনে পোঁকা সনাক্ত করণ এবং দমন করা বিষয়ে ইতোমধ্যে অনেক সারা পড়েছে। বর্তমানে কৃষক পরিবারগুলো আলোক ফাঁদ ব্যবহারে তাদের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে এবং এ অঞ্চলে কৃষকদের উদ্বোদ্ধ করা হচ্ছে আলোক ফাঁদ স্থাপনের বিষয়ে।
ফাঁদ ব্যবহারকারী বাড়বকুন্ড ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষক মোঃ ওমর গনি জানান, মৌসুমের রোপ আমন ধানের মাঠে বর্তমানে ক্ষতিকারক পোঁকামাকড় দমনে আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হচ্ছে। ফলে প্রতিদিন অসংক্ষ্য পোঁকামাকড় আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে । ক্ষেতে পোঁকামাকড় আক্রমনের জন্য অনেক সময় ধানের উৎপাদন কম হয়। তাই আলোক ফাঁদ স্থাপনের মধ্যদিয়ে পোঁকামাকড় অনেকাংশে দমন হবে। এছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগও সন্ধ্যা বেলায় ধানের মাঠে এসে আলোক ফাঁদ স্থাপনের উপর এলাকার কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
অন্যদিকে মুরাদপুর ৪নং ইউনিয়নের ফকিরহাট এলাকার কৃষক বিপুল চৌধুরী বলেন, প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় বেশির ভাগই সবজি ও ধান ক্ষেতে পোঁকামাকড় আক্রমন করে থাকে। আলোক ফাঁদ স্থাপনের মধ্যদিয়ে কৃষক পরিবারগুলো এর সুফল উপভোগ করতে পারবে। এছাড়া কৃষি অফিসের পরামর্শে সন্ধ্যার সময় ধান ক্ষেতে আলোক ফাঁদ স্থাপনের পর প্রচুর পরিমান পোঁকামাকড় আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। এতে ধান ক্ষেতে পোঁকার আক্রমন থেকে অনেকটা রক্ষা পাওয়া যাবে। আর ধানের মাঠে পোঁকা দমন করা গেলে অবশ্যই অন্যান্য বছরের তোলনায় চলতি রোপ আমন ধানের উৎপাদনও বৃদ্ধি হবে বলে আশাকরা যাচ্ছে।
এ এস / জি এম এম / আর এস পি :::