সীতাকুণ্ডে যুবদল নেতা হত্যার জেরে তিন আওয়ামীলীগ সমর্থকের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি আবুল কালামকে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ইফতারের পর কিছু অস্ত্রধারী যুবক এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দোকানের পাশে ফেলে চলে যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় কালামকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
আবুল কালাম মারা যাওয়ায় তার ক্ষুব্ধ সমর্থকরা তিনটি বসতঘর, একটি মাইক্রো বাস ভাঙচুর ও একটি ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। এ সময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় পুলিশ এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন।
জানা গেছে, স্থানীয় যুবদল নেতা আবুল কালামের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাত ১টার পর স্থানীয় আ.লীগ-যুবলীগের তিন কর্মী সমর্থকের বাড়িতে ভাঙচুর ও এক ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। পরে একটি মাইক্রোবাসে ভাঙচুর চালায়।
নিহত আবুল কালামের পুত্র আবু বক্কর ছিদ্দিকী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, আমার বাবা আবুল কালাম একটি খাল থেকে মাটি কাটছিলেন। মাটি কাটার সময় একদল সন্ত্রাসী চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দেওয়াতে আমার বাবাকে তারা কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় আমি বাদী হয়ে সুনির্দিষ্ট ১৫ ও অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় মামলা দায়ের করি
অগ্নিকাণ্ড ও হামলার শিকার একই এলাকার মুন্সী বাড়ির যুবলীগ নেতা মুরাদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, কয়েকদিন আগে আবুল কালামের একটি মোটরসাইকেল পুলিশ নিয়ে যান। এ নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে কয়েক দিন যাবৎ চরম উত্তেজনা চলে আসছিল। ক্ষুব্ধ অজ্ঞাত গ্রামবাসীরা আবুল কালামকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আবুল কালামের দলের ৬/৭ জন মুখোশধারী সন্ত্রাসী রাত ১টায় আমার বসত ঘরে হামলা চালায়। এসময় ঘরে বেড়া ও দরজা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দরজায় শিকল লাগিয়ে পেট্রোল ঢেলে ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঘরে আটকা পড়াদের চিৎকারে আশপাশের মানুষ উদ্ধারে ছুটে আসেন। ঘরের পাশে থাকা পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
ঠিক একই সময়ে মুরাদের চাঁচাত ভাই আরিফের মাইক্রোবাস ও আ.লীগ সমর্থক মো. সাইফুলের ঘর ও মুন্নার ঘর ভাঙচুর চালানো হয়।
ভাঙচুরের শিকার সাইফুলের স্ত্রী রুনা জানান, আ.লীগের রাজনীতি করার কারণে যুবদল কর্মী খুনে জেরে তার সমর্থকরা তাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জহুরুল আলম জহুর বলেন, আ.লীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে আবুল কালামকে হত্যা করেছে।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. আফজাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আবুল কালাম নিহতের ঘটনায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এ মামলার এক নম্বর আসামি এসএম মুরাদ ও চার নম্বর নুর উদ্দিন হারেছকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চলছে।
এএইচ