সীতাকুণ্ডে ভুট্টার বাম্পার ফলন, মেঘ দেখলেই আতঙ্ক বাড়ে চাষীদের

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এ বছর ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। ভুট্টা সীতাকুণ্ডের কৃষকদের ভাগ্য পাল্টে দিয়েছে। তবে আকাশে মেঘ দেখলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ভুট্টা চাষীদের মাঝে। কারণ গাছের গোড়ায় পানি জমলে ভুট্টাগাছ সহজে পচে যায়। এ কারণে কৃষকেরা খুব বেশি খুশি হতে পারছেন না।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে কৃষকরা মৌসুমে সরকারি প্রদর্শনী আওতায় বিনামূল্যে ভুট্টার বীজ ও সার সংগ্রহ করে ৩৩ শতক জমিতে বীজ বোপণ করেন। এ বছর ভুট্টার উৎপাদনে কৃষকের সঙ্গে খুশি হয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরও।

উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের ভূঁইয়ার হাট এলাকার চাষী নুরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে হাইব্রিড কহিনুর জাতের ৩ কেজি ভুট্টার বীজ, ওষুধ, সার ও আগাছা পরিস্কারের জন্য ১৬০০ টাকা সংগ্রহ করি। পৌষ মাসে অনেক যত্নে ৩৩ শতক জমিতে ভুট্টার বীজ বোপণ করি। বর্তমানে প্রতি গাছে ৩ থেকে ৪টি করে ভুট্টার ফলন ধরেছে। আর ভুট্টার উৎপাদন ভালো হওয়ায় এখানকার কৃষকরা ভুট্টা চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভুট্টাক্ষেতে সময় কাটে আমার। প্রবাসে দীর্ঘদিন থাকার পর আবারও নিজের দেশে এসে কৃষি কাজ শুরু করেছি। ভুট্টার ফলনও খুব ভালো হয়েছে। তবে আকাশে মেঘ দেখলে আমাদের আতঙ্ক বেড়ে যায়। কারণ অধিক বৃষ্টিতে ভুট্টা গাছ টিকে না।

অপরদিকে একই এলাকায় দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে প্রতি হেক্টরে ৬ থেকে ৭ টন ভুট্টার উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ভুট্টা পুষ্টিকর দানাদার খাদ্য। ভুট্টার কোনো কিছু ফেলে দিতে হয় না। ভুট্টার ভূষী দিয়ে মুরগী ও গরুর খাদ্য হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। তাছাড়া জালানিতেও ভুট্টার গাছের ভূমিকা কিন্তু কম নয়। এ এলাকার কৃষকদের কৃষি বিষয়ে বিভিন্ন রকম পরামর্শ দিয়ে আসছি।

এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্রনাথ বলেন, এক সময় এ উপজেলায় ভুট্টার চাষ তেমন হতো না। কয়েক বছর ধরে কৃষক পরিবার ভুট্টা চাষে বেশ লাভবান হচ্ছেন। তাই তারা এবারও সরকারিভাবে বিনা মূল্যে বীজ, সার ও আগাছা পরিস্কারের জন্য নগদ অর্থ পেয়ে পুষ্টিকর খাদ্য ভুট্টার চাষ করেন।

অন্যদিকে একই ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বগাচতর ব্লকের মো. নাছির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, আমি এ প্রথম উপজেলাা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস থেকে বিনামূল্যে ভূট্টার বীজ, সার, ওষুধ ও আগাছা পরিস্কারের জন্য নগদ অর্থ সংগ্রহ করে তা পৌষের মাঝামাঝি সময়ে ভুট্টার বীজ বোপণ করেছি। ভুট্টার ফলন অনেক ভালো হয়েছে। সামনে আরও ব্যাপকভাবে ভুট্টার চাষ করে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করার ইচ্ছে আছে।

এদিকে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আল মামুন রাসেল চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভুট্টার চাষ করেছেন কৃষক। এতে ফলন বেশ ভালো হয়েছে। এখানকার মাটি উর্বর বলে ভুট্টা চাষে উপযোগী।

তিনি আরও বলেন, রবি মৌসুমে প্রণোদনার আওতায় বিভিন্ন ইউনিয়নের ৮০ জন কৃষকের মাঝে হাইব্রিড ভুট্টার বীজসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়েছিল। তবে প্রণোদনা এবং প্রদর্শনীর কৃষক ছাড়াও নিজেরা আরও ৬ হেক্টরসহ মোট ১৬ হেক্টর জমিতে ১১০ জন কৃষক ভুট্টার চাষ করেছেন।

এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm