সিনেমায় অনুদানের অংক বাড়ানো হবে: সিনেপ্লেক্সে তথ্যমন্ত্রী

সিনেমায় অনুদানের অংক বাড়ানো হবে। আগে শুধুমাত্র আর্ট ছবিতে অনুদান দেওয়া হতো। আইন সংশোধন করে আর্ট ও বাণিজ্যেক ধারার সিনেমায় অনুদান দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, সিনেমায় পুঁজি বিনিয়োগ হলেও সিনেমা হল না থাকায় তা উঠে আসছে না। একটা সিনেমায় ৬০ লক্ষ টাকা দিয়ে কিছুই হয় না। তাই একটা সিনেমায় কমপক্ষে ৭৫ লক্ষ টাকা অনুদানের ব্যবস্থা করছে সরকার। এছাড়াও সিনেমার জন্য সর্বোচ্চ বাজেট ৫ কোটি থেকে ১০ কোটিতে করেছে সরকার।

শনিবার ( ৫ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রামের প্রথম সিনেপ্লেক্স সিলভার স্ক্রিনে আয়োজিত ‘আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের আয় উপার্জন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের রুচির পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সেটির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের ‘হল’ গুলোর পরিবর্তন হয়নি। যে সিনেমাগুলো মুক্তি পাচ্ছে সেগুলো দেখার জন্য সিনেপ্লেক্সে ভীড় হচ্ছে অথচ গ্রামের দলগুলোতে দর্শক নেই। তাই যেসমস্ত সিনেমাহল বন্ধ হয়ে গেছে সেগুলো যদি কেউ চালু করতে চায় তাহলে হল মালিকরা যাতে সহজ শর্তে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পায় সে জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলেছি।

এছাড়াও এফডিসিতে নতুন ভবন তৈরির জন্য সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারিভাবে সারাদেশে ৩০০টি আসনের তথ্যকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘চলচ্চিত্র জীবনের কথা বলে, চলচ্চিত্র সমাজের দর্পণ। তাই নতুন প্রজন্মের জন্য প্রত্যেকটা সিনেমায় বার্তা থাকা দরকার।

কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদলের সঞ্চালনায় এবং কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশের সম্পাদক রুশো মাহমুদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এমএ মালেক, সংসদ সদস্য ওয়াসিকা আয়েশা খান, দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক ডা. রমিজউদ্দিন চৌধুরী।

আমাদের চলচ্চিত্র শিল্প এবং বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জবিষয়ক প্রবন্ধ নিয়ে আলোচনা করেন আরটিভির প্রধান নির্বাহী সৈয়দ আশিকুর রহমান, চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাব রেজা চৌধুরী ও প্রথম আলো চট্টগ্রাম অফিসের বার্তা সম্পাদক ওমর কায়সার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এমএ মালেক বলেন, আমি সিনেমা দেখি না, তা নয়। আমি আমেরিকা গিয়েছিলাম সেখানে বাংলা সিনেমা দেখেছি। বাঙালিরা যখন বিদেশে যায় তখন বাংলা সিনেমা দেখে, পরিবার নিয়ে দেখে। মাস তিনেক আগে কলকাতা গিয়েছিলাম সেখানে একটা সিনেমা দেখেছিলাম। সিনেমার নাম- ‘১০২ নটআউট’ সেখানে মাত্র তিনটা চরিত্র। কোনো মহিলার চরিত্র নেই। সিনেমাটা দেখে আমি খুব উৎসাহবোধ করলাম। আমার বয়স এখন ৭৯ বছর। কয়েক মাসের মধ্যে আমি ৮০ বছরে পড়বো। তখন থেকেই ভাবলাম আমি ১০২ বছর বাঁচতে চাই।

তিনি আরও বলেন, ‘এই যে সিনেমার সুফলটা হচ্ছে সেটাই। আমার বাঁচার একটা গতি আমি পেয়ে গেছি সিনেমাটা দেখে।

পরক্ষণে মজা করে বললেন, ‘আবার একটা বুদ্ধি করলাম। ১০২ বছর তো বাঁচবো না কোনো অবস্থাতেই। কাজেই আমি যখন ৮০তে পড়বো তখন ভাববো ৮৫। যখন ৮১তে পড়বো তখন ভাববো ৯০। এরকম করে আমি ১০২ বছর পার করে দেবো। আল্লাহ যদি আমাকে ৩-৪ বছর সময় দেয়।

বক্তব্যে আরটিভির সিইও সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্রকে শিল্প বলেছেন তাহলে চলচ্চিত্রকে সকল সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। আমরা চলচ্চিত্রের সমস্যা চিহ্নিত করতে পেরেছি কিন্তু পরিবেশটা দরকার। এখন সমন্বিত উদ্যোগে সমাধান করে এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাব রেজা চৌধুরী বলেন, সিনেমা একটা রসায়ন। আমরা মুখ থুবড়ে পড়িনি, আসলে উঠে দাঁড়াচ্ছি। এ শিল্পে অনেক সৃজনশীল মানুষ রয়েছেন আবার সরকারও যথেষ্ঠ সহযোগিতা করছে। সরকারের স্বদিচ্ছা থাকার পরেও কিছু দুর্নীতির কারণে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি।

এসআর/এএইচ

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!