সিট বাকি ছয়টি, আর করোনা রোগী নেবে না চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল

বাসায় মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যেতে পারে

চট্টগ্রামে দিন দিন ভয়াবহ হচ্ছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি। গত কয়েকদিন রীতিমতো পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। এটি শুধু সংখ্যায় বাড়ছে এমন নয়, বরং আক্রান্তদের সংক্রমণের ধরনও আগের চেয়ে বদলে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে আতঙ্কের খবরটি হচ্ছে চট্টগ্রামে করোনা চিকিৎসার বিশেষায়িত জেনারেল হাসপাতালে আর মাত্র ছয়টি শয্যা খালি আছে। ফলে এখন থেকে খুব ‘ইমার্জেন্সি’ কোন রোগী না হলে আর কাউকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লায় অবস্থিত জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য মোট শয্যা আছে ১০০টি। শুক্রবার (১৫ মে) পর্যন্ত সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছে ৯৪ জন করোনা রোগী। এর মধ্যে ৭২ জন করোনা পজিটিভ, বাকি ২২ জন করোনা সাসপেক্ট। তাদের অবস্থাও সুবিধার নয় বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রে।

চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. জামাল মোস্তফা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে এই মুহূর্তে ৯৪ জন রোগী ভর্তি আছেন। এখানে আর তিল ধারণের জায়গা নেই। আমরা আর ৬ জন মাত্র রোগী নিতে পারবো।’

‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এখন থেকে খুব ইমার্জেন্সি কোন রোগী না হলে, শ্বাসকষ্ট বেশি না হলে কোন রোগীকে ভর্তি নেবো না। তাদের ফিল্ড হাসপাতালে পাঠিয়ে দেবো।’

এই সিটগুলো হাতে রাখার যৌক্তিকতা তুলে ধরে ডা. জামাল মোস্তফা বলেন, ‘করোনা পজিটিভদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কোথাও চিকিৎসার সুযোগ নেই চট্টগ্রামে। তাই এই সিটগুলো হাতে না রাখলে শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীদের কোথাও যাওয়ার জায়গা থাকবে না।’

চট্টগ্রামের করোনা পরিস্থিতির জন্য আগামী দুই সপ্তাহ সময়কে ‘পিক টাইম’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আগামী দুই সপ্তাহ আমাদের জন্য পিক টাইম। এই সময়টার মধ্যে বাসায় মৃত্যুর ঘটনাও বাড়বে বলে আশংকা করছি। আমাদের জন্য এই সময়টা খুবই চ্যালেঞ্জের হবে।’

এই মুহূর্তে নগরবাসীদের জন্য কী পরামর্শ দিতে চান— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পরামর্শ একটাই, স্টে হোম স্টে সেইফ (বাড়িতে থাকুন নিরাপদে থাকুন)। প্রয়োজনে ভাত-আলুভর্তা খেয়ে থাকুন। তবুও ঘর থেকে বের হবেন না। দেখুন এখন পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে ডাক্তার, পুলিশ, সাংবাদিক, গার্মেন্টসকর্মী, সবজি বিক্রেতা এসব রোগীর সংখ্যা বেশি। মানে যাদের বিভিন্ন কারণে বাইরে বের হতে হচ্ছে তারাই ইনফেকটেড (আক্রান্ত) হচ্ছেন বেশি।’

শুক্রবার (১৫ মে) পর্যন্ত চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪১ জনে। এর মধ্যে মহানগরের রয়েছেন ৪৬১ জন ও উপজেলাগুলোতে ১৮০ জন রোগী।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!