সিজারিয়ান ডেলিভারি থেকে চট্টগ্রামের একেক প্রাইভেট হাসপাতালের মাসে আয় অর্ধ কোটি টাকা
বড় অংকের আয়ের ছক সিজারিয়ানের চক্রে ফেলে
একজন গর্ভবতী হবু মায়ের সন্তান প্রসবের লক্ষণ স্বাভাবিক হলেও বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যাওয়ার পর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই বাচ্চার জন্ম দেওয়া হচ্ছে সিজারিয়ান ডেলিভারি করে। এরপর বাধ্য হয়েই পরের বাচ্চা প্রসবের সময় সিজারিয়ানের পথ বেছে নিতে হয় সেই মাকে। এভাবে অমানবিক কৌশলে বড় অংকের আয়ের ছক কষা হয় প্রথম সিজারিয়ান ডেলিভারি থেকেই। কারণ নরমাল ডেলিভারির চেয়ে সিজারিয়ান ডেলিভারিতে খরচ বেশি। এভাবে সিজারিয়ান ডেলিভারি করিয়েই প্রতি মাসে ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলো কামিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা। শুধু এই খাত থেকেই চট্টগ্রামে প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর প্রতিটি মাসে গড়ে অর্ধ কোটি টাকা কামায়। এমনকি ‘কম খরচের’ হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত মেমন মাতৃসদনের প্রতি মাসে সিজারিয়ান থেকে আয় হচ্ছে গড়ে ১০ লাখ টাকা। নগরীর কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালও ক্লিনিক ঘুরে এমন সব তথ্যই পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রাম প্রতিদিনের অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশেষ করে প্রথমবার যেসব গর্ভবতী মায়েরা বাচ্চা প্রসব করতে এসব হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাচ্ছেন, শুধুমাত্র টাকার লোভে ভবিষ্যতের জন্য তাদের এক বিপজ্জনক অবস্থায় ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রথমবার বাচ্চা প্রসব করতে যাওয়া এসব হবু মায়েদের পর্যবেক্ষণে না রেখেই নিয়ে যাওয়া হয় সিজারিয়ান অপারেশনের টেবিলে। ক্লিনিকগুলোর এই ফাঁদে পড়ে কিংবা ডাক্তারদের অবহেলায় প্রথমবার সিজারিয়ান করার ফলে দ্বিতীয় সন্তান জন্মদানের সময় বাধ্য হয়েই আগের পথে হাঁটতে হচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের। আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ডাক্তারদের লক্ষ্যও থাকে এটাই— এমন অভিযোগও উঠছে।
বিষয়টি ব্যাখা করে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সাহেনা আক্তার জানান, ‘প্রথমবার যখন কারও সিজারিয়ান অপারেশন করে ফেলে, তখন বাধ্য হয়েই দ্বিতীয়বার সন্তান প্রসবের সময় সিজারিয়ান করতে বাধ্য হচ্ছেন ডাক্তাররা। কারণ প্রথমবার সিজারিয়ানের পর দ্বিতীয়বার নরমাল প্রসবের চেষ্টা করতে গেলে আগের সেলাইয়ে চাপ পড়ে। কোনো কারণে প্রসব বিলম্বিত হলে মায়ের জরায়ু ও আগের সেলাই ফেটে যেতে পারে। তখন তাৎক্ষণিকভাবে অপারেশন না করলে মায়ের মৃত্যু হতে পারে। এই বিপদের কারণে বিদেশে সিজারিয়ান রোগীকে দ্বিতীয়বার স্বাভাবিকভাবে প্রসবের ঝুঁকি নেওয়া হয় না।’ সময় নিয়ে প্রথম বাচ্চা স্বাভাবিক প্রসবেই হওয়া উচিত বলে মনে করেন এই চিকিৎসক।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেমন মাতৃসদন হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি করতে গেলে ভর্তি ফি ১০০ টাকা, ডেলিভারি চার্জ ১ হাজার ২০০ টাকা, সেলাই ৩০০ টাকা। সাথে রয়েছে সিট ভাড়া। কিন্তু প্রথম সিজারের খরচে জানা গেছে, ভর্তি ফি ১০০ টাকা, সার্জনের ফি ৩ হাজার ৭৫০ টাকা, সহকারী প্রথম সার্জনের ফি ৩ হাজার টাকা, সহকারী দ্বিতীয় সার্জনের ফি ১ হাজার টাকা, ড্রেসিং ১৫০ টাকা, অক্সিজেন ১০০ টাকা, অপারেশন থিয়েটারের চার্জ ১ হাজার ৫০০ টাকা, অ্যানেসথেসিয়া ২ হাজার ২৫০ টাকাসহ মোট খরচ ১১ হাজার ৮৫০ টাকা। সাথে রয়েছে সিট ভাড়া।
দ্বিতীয়বার সিজারের খরচ হয় আগের চেয়ে একটু বেশি। ভর্তি ফি ১০০ টাকা, সার্জনের ফি ৪ হাজার ২০০ টাকা, চারজন সহকারী প্রথম সার্জনের ফি জনপ্রতি ৩ হাজার টাকা, সহকারী ২য় সার্জনের ফি ১ হাজার টাকা, ড্রেসিং ১৫০ টাকা, অক্সিজেন ১০০ টাকা, অপারেশন থিয়েটারের চার্জ ১ হাজার ৫০০ টাকা, অ্যানেসথেসিয়া ২ হাজার ২৫০ টাকাসহ ১২ হাজার ৩০০ টাকা। সাথে রয়েছে সিট ভাড়া।
মেনন মাতৃসদন হাসপাতালে সম্প্রতি সরেজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কোনো গর্ভবতী হবু মা শুরুতে একটা কার্ড করে সন্তান প্রসবের আগ পর্যন্ত এ হাসপাতালের চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকেন। তারপরেও একই রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরপরই পড়তে হয় সিজারিয়ানের কোপে।
একাধিক গর্ভবতী হবু মায়ের স্বজনেরা জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা অপেক্ষা না করেই সিজারিয়ানের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। কিন্তু এরকম অভিযোগ অস্বীকার করে মেমন-১ ইউনিটের ইনচার্জ গাইনি চিকিৎসক শাহীন আরা চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘মেমনে স্বাভাবিক প্রসবের চেয়ে বেশি সিজারিয়ান অপারেশনে বাচ্চা প্রসব হয়— এ ধারণা ভুল। আমরা রোগীকে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করি নরমাল ডেলিভারির জন্য। আমাদের এখানে বেশি রেফারেল রোগী বেশি আসে। সেগুলোর সিজারিয়ান ছাড়া উপায় থাকে না।’
কিন্তু তার এ কথার সত্যতা পাওয়া যায়নি। অনুসন্ধানে আরও জানা গেছে, মেনন মাতৃসদন হাসপাতালে আয়ের বড় একটা অংশই আসে সিজারিয়ান ডেলিভারি থেকে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের হিসাব থেকে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বরে মেনন মাতৃসদন হাসপাতালে সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে ৯১ জন হবু মায়ের। সেখান থেকে আয় এসেছে ১০ লাখ ৬৩ হাজার ১৩০ টাকা। একই মাসে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ১৬০ জনের। এখান থেকে আয় হয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯৯০ টাকা। একই মাসে বহির্বিভাগে গর্ভবতী মহিলা চিকিৎসা নিয়েছেন ৯২৮ জন।
একই বছরের আগস্টে সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে ৯৭ জনের। সেখান থেকে আয় এসেছে ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৮০ টাকা। নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ১১৪টি। সেখান থেকে আয় এসেছে ২ লাখ ৫৬ হাজার ১৬০ টাকা। একই মাসে গর্ভবতী মহিলা চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৭৬ জন।
জুলাইয়ে সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে ৮৩ জনের। সেখান থেকে আয় এসেছে ১০ লাখ ২ হাজার ৭৮০ টাকা। নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ৭১ জনের। সেখান থেকে আয় এসেছে ২ লাখ ৬ হাজার ৮৯০ টাকা। বহির্বিভাগে গর্ভবতী মহিলা চিকিৎসা নিয়েছেন ৭১৬ জন।
জুনে সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে ৭৮ জনের। সেখান থেকে আয় হয়েছে ৯ লাখ ৬০ হাজার ৬৯০ টাকা। নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ৮৫ জনের। সেখান থেকে আয় এসেছে ২ লাখ ২৯ হাজার ৯৩০ টাকা। বহির্বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ৮৫৪ জন গর্ভবতী মহিলা।
২০২২ সালের জানুয়ারিতে গত বছরের তুলনায় সিজারিয়ান ডেলিভারির সংখ্যা আরও বেড়েছে। জানুয়ারিতে সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে ১০৩ জনের। সেখান থেকে আয় এসেছে ১১ লাখ ৭০ হাজার ১৪০ টাকা। নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ১২২ জনের। সেখান থেকে আয় এসেছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা। বহির্বিভাগ থেকে গর্ভবতী মহিলা চিকিৎসা নিয়েছেন ১৬১ জন।
শুধু মেমন মাতৃসদনই নয়, নগরীর অনান্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো নরমাল ডেলিভারির চেয়ে সিজারিয়ান ডেলিভারি করে আয়ের পথ সুগম করেছেন হাসপাতাল ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।
চট্টগ্রাম নগরীর সিএসসিআর হাসপাতালে ৯ জন গাইনি বিশেষজ্ঞ রোগী দেখে থাকেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক ডা. সামসুন্নাহার, অধ্যাপক ডা. রওশন মোর্শেদ, অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, ডা. ফাহমিদা ইসলাম চৌধুরী, ডা. সোয়েলা শাহনাজ, ডা. আইনুন নাহার হামিদ, ডা. সাবরিনা মেহের, ডা. ফারজানা চৌধুরী, ডা. রেশমা শারমীন।
সিএসসিআরে প্রতি সিজারিয়ান অপারেশন করতে খরচ হয় ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। পুরোটাই প্যাকেজ সিস্টেম হিসেবে আগেই চুক্তি করে ফেলতে হয় গর্ভবতী হবু মা ও তাদের স্বজনদের। অন্যদিকে নরমাল ডেলিভারির খরচ ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যেই হয়ে থাকে বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রে।
সিএসসিআরে ২০২০ সালে জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে ৯৩৬টি। মাসভিত্তিক হিসেবে দেখা গেছে, জানুয়ারিতে ১১৫ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১১৪ জন, মার্চে ৯৮ জন, এপ্রিলে ৪২ জন, মে ৫৩ জন, জুনে ৭২ জন, জুলাইয়ে ৭৫ জন, আগস্টে ৮০ জন, সেপ্টেম্বরে ৭৯ জন, অক্টোবরে ৫৫ জন, নভেম্বরে ৭৫ জন ও ডিসেম্বরে ৭৮ জন গর্ভবতী মায়ের সিজারিয়ান ডেলিভারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পরযন্ত নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ৪৭৪ জনের। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৫৭ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৮ জন, মার্চে ৪৪ জন, এপ্রিলে ২৭ জন, মে তে ৪১ জন, জুনে ৩৫ জন, জুলাইয়ে ৩৮ জন, আগষ্টে ৩৪ জন, সেপ্টেম্বরে ৪২ জন, অক্টোবরে ৩৮ জন, নভেম্বরে ৩৭ জন ও ডিসেম্বরে ৪৩ জন।
২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পরযন্ত এ হাসপাতালে সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে ১ হাজার ৪৫৭ জনের। মাসভিত্তিক পৃথক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, জানুয়ারিতে ১১৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯৮ জন, মার্চে ১২৩ জন, এপ্রিলে ১২৭ জন, মে মাসে ১৪১ জন, জুনে ১২৩ জন, জুলাইয়ে ১১২ জন, আগষ্টে ১০৪ জন, সেপ্টেম্বরে ১০১ জন, অক্টোবরে ১৬২ জন, নভেম্বরে ১৩২ জন ও ডিসেম্বরে ১১৬ জন গর্ভবতী মায়ের সিজারিয়ান ডেলিভারি করা হয়েছে।
অন্যদিকে একই বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পরযন্ত নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ৪৮৮ জনের। মাসভিত্তিক পৃথক বিশ্লেষণে দেখা গেছে— জানুয়ারিতে ৩৪ জন, ফেব্রুয়ারিতে ২৩ জন, মার্চে ৩২ জন, এপ্রিলে ২৭ জন, মে মাসে ৩৭ জন, জুনে ৫৫ জন, জুলাইয়ে ৩৬ জন, আগস্টে ৫৩ জন, সেপ্টেম্বরে ৪৮ জন, অক্টোবরে ৫৭ জন, নভেম্বরে ৪৫ জন এবং ডিসেম্বরে ৪১ জনের নরমাল ডেলিভারি হয়েছে।
অন্য প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর মতো সিএসসিআরও সিজারিয়ান ডেলিভারিকে আয় বাড়ানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে— এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে হাসপাতালের চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. সাইফুদ্দিন মাহমুদ চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি অবসরপ্রাপ্ত একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। একজন চিকিৎসক কখনোই চেষ্টা না করে রোগীর সিজারিয়ান ডেলিভারির সিদ্ধান্ত নেন না। জরায়ুর মুখ খুলতে সময় লাগে। ইনজেকশনের পর জরায়ুর মুখ খুলতে যে সময় দরকার, সে সময় দিতে চায় না হবু মা ও তার পরিবার। তীব্র ব্যাথায় কাতর হয়ে তারা নিজেরাই বলে সিজারিয়ান ডেলিভারি করাতে। আর বাচ্চার অবস্থান উল্টো, পানি ভেঙ্গে যাওয়া, বাচ্চার হৃৎস্পন্দন কমে যাওয়া ইত্যাদি কারণে যখন বাচ্চা ও মা সংকাটাপন্ন অবস্থায় পড়ে, তখনই সিজার করাতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা। এখানে সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চেম্বার করেন। তাই হাসপাতালে আয়েরও যথেষ্ট কারণ আছে।’
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে স্বাভাবিক প্রসব যেখানে হয়েছে ১৯৬ জনের, সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনে সন্তান জন্ম দিতে হয়েছে ২৯৫ জন নারীকে। সেপ্টেম্বর মাসে সেখানে স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ১৬১ জনের, অথচ ওই মাসে সিজারিয়ানে বাচ্চা হয়েছে ৩০৩ জনের। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে সিজারিয়ান ডেলিভারি ৩৫ থেকে ৪০ হাজার মধ্যে হয়ে থাকে বলে জানা গেছে। নরমাল ডেলিভারি আড়াই থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে হয়ে যায় চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে।
তবে এই তিন হাসপাতালই শুধু নয়, অন্য প্রায় সব হাসপাতাল ও ক্লিনিকেও একই অবস্থা। সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রতিযোগিতায় কে কার আগে এগিয়ে যাবে— তারই যেন প্রতিযোগিতা চলছে। স্বাভাবিক উপায়ে বাচ্চা প্রসবের জন্য আগে বেশ নামডাক ছিল লালখানবাজার মমতা ক্লিনিকের। সেই ক্লিনিকই এখন সিজারিয়ানের নামে রীতিমতো গরিব রোগীর পকেট কাটছে। একই অবস্থা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিচালিত ইমেজ, নিস্কৃতি কিংবা সূর্যের হাসি ক্লিনিকেও।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি দেখা গেছে লালখানবাজারের মমতা ক্লিনিকে। ২০২১ সালের মে মাসে এই মমতা ক্লিনিকে ৭৩ জন নারী স্বাভাবিক প্রসব করেছেন, আর এর বিপরীতে ওই মাসে সেখানে সিজারিয়ানে বাচ্চা হয়েছে প্রায় চারগুণ বেশি—২৬৩ জন। এখানে সিজারিয়ান ডেলিভারি করতে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মতোই খরচ হয়ে থাকে। রোগীপ্রতি সিজারিয়ান ডেলিভারিতে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে থাকে মমতা এনজিও ক্লিনিক। নরমাল ডেলিভারি করতে লাগে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।
সিপি