সিঙ্গাপুর থেকে সালিশের ভয় দেখাচ্ছে এস আলম

চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের জব্দ করা সম্পদ ও বিনিয়োগ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করতে ছয় মাসের সময় দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদ। এর মধ্যে সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক সালিশিতে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও একাধিক উপদেষ্টাকে ছয় মাসের সময় দিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির নোটিশ পাঠিয়েছে এস আলম।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত এস আলম ব্যাংক খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। এর মধ্যে অন্তত এক হাজার কোটি ডলার দেশের বাইরে পাচার করে নিয়ে যান সাইফুল আলম মাসুদ একাই। এটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ব্যাংক ডাকাতির সবচেয়ে বড় একটি ঘটনা।

এদিকে সাইফুল আলম মাসুদের পাঠানো নোটিশে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে ২০০৪ সালের দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তির কথা বলা হয়েছে। এছাড়া এই ক্ষতি আদায়ে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে তিনি আন্তর্জাতিক আইনি প্রচেষ্টা শুরু করেছেন— একথাও জানানো হয়েছে।

নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, মাসুদের পরিবার ২০১১ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে তারা দেশটির নাগরিকত্ব পেয়েছেন। ২০২০ সালে তারা বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ সরকার ও সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকাণ্ড ও অবহেলার কারণে এস আলম গ্রুপের বিনিয়োগ ও সম্পদমূল্য সম্পূর্ণভাবে বা আংশিকভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। এ অব্যাহত কর্মকাণ্ড ও অবহেলা বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় বিনিয়োগকারীদের অধিকার এবং বাংলাদেশের আইন লঙ্ঘন, যে কারণে সরকারের সঙ্গে তাদের মক্কেল সাইফুল আলমের বিরোধ তৈরি হয়েছে।

ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, নোটিশটি পাঠিয়েছেন মার্কিন আইনি প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল অ্যান্ড সুলিভানের আইনজীবীরা। নোটিশের অনুলিপি তাদের হাতে এসেছে।

এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে এস আলম গোষ্ঠী বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি পাচার করেছে। ওই সাক্ষাৎকারের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেকে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে দাবি করেন এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মো. সাইফুল আলম। বাংলাদেশ ব্যাংক এস আলম গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যে ভীতি প্রদর্শনমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ চুক্তির আলোকে তার সুরক্ষা প্রাপ্য।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm