চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি) দীর্ঘদিন ধরে নানা ঘটন-অঘটনের জন্ম দেওয়া ওসি নাজিম উদ্দিন মজুমদারকে অবশেষে পাঁচলাইশ থানা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিএমপির আরও দুই থানায় ওসি ও ওসি-তদন্ত পদে রদবদল ঘটেছে।
রোববার (২০ আগস্ট) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই রদবদল করা হয়েছে।
ওই আদেশ অনুযায়ী, খুলশী থানার ওসি সন্তোষ চাকমাকে পাঁচলাইশ থানার ওসি হিসেবে বদলি করা হয়েছে। অন্যদিকে পাঁচলাইশ থানার বর্তমান ওসি নাজিম উদ্দিন মজুমদারকে সিএমপির সিটিএসবির পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
এদিকে কোতোয়ালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রুবেল হাওলাদারকে খুলশী থানার ওসি হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
সিটিএসবির পুলিশ পরিদর্শক এআইএম তৌহিদুল করিমকে চকবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
এছাড়া সিটিএসবির পুলিশ পরিদর্শক রফিক উল্লাহকে সিএমপির পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) হিসেবে বদলি করা হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) মোহাম্মদ আতিকুর রহমানকে সিএমপির পুলিশ পরিদর্শক (ডিবি-উত্তর) হিসেবে বদলি করা হয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর হামজারবাগে বাড়ি দখল ও চাঁদা দাবির অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার বিতর্কিত ওসি নাজিম উদ্দীন ও এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শামীমা ওয়াহেদ নামে এক নারী। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলিউল্লাহর আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়। আদালত মামলাটিকে ক্রিমিনাল মামলা হিসেবে আমলে নিয়ে চট্টগ্রাম পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআইকে) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে চট্টগ্রামে কিডনি ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ানোর প্রতিবাদ করায় মো. মুনতাকিম প্রকাশ মোস্তাকিম নামের এক যুবককে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে পাঁচলাইশ থানার ওসি এবং এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে গত ২২ ফেব্রুয়ারি মামলা করা হয়। ওই সময় মেডিকেল পরীক্ষা ও গণমাধ্যমে মুনতাকিমের যেসব ছবি প্রকাশ হয়, সেখানে মোস্তাকিমের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গিয়েছিল।
এরপর আদালতের আদেশ অনুযায়ী মোস্তাকিমের পক্ষে চট্টগ্রাম সিআইডির পুলিশ সুপার মো. শাহনেওয়াজ খালেদ গত ২২ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিন ও এসআই আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করেন। কিন্তু মামলা হওয়ার আগের দিন হঠাৎ ছুটিতে চলে যান অভিযুক্ত ওসি নাজিম এবং এসআই। অথচ ফৌজদারি মামলা হলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ।
পরে সিআইডি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে জানায়, মুনতাকিমকে পুলিশি হেফাজতে নির্যাতনের কিছুই পাওয়া যায়নি এবং মামলায় যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে সেগুলোরও সত্যতা পাওয়া যায়নি।
অথচ আইন অনুযায়ী চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের আগে বাদীকেও কিছু জানানো হয়নি।
সিপি