দেড় ফুট লম্বা লাঠি দিয়ে মাঝবয়সী এক লোককে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে বেধম পেটানো হচ্ছে। প্রথম দেখায় কোনো চোর বা ডাকাতকে মারছে বলে মনে হলেও আদতে মার খাওয়া সেই লোক একজন সিএনজি অটোরিকশাচালক।
চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাসের কর্পোরেশনের অফিসের সামনে নিরাপত্তারক্ষীদের নির্দেশে না থামার অপরাধে তাকে এভাবে মারধর করা হয়। এমনকি আধ ঘণ্টা তাকে আটকে রাখাও হয়।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, সিটি কর্পোরেশনের অফিসের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তাকর্মীদের বাঁধার মুখে পড়েন ওই সিএনজি চালক। তিনি বাঁধা না মেনে চলে যেতেই অপরপ্রান্তে থাকা অন্য নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করে। এরপর তিন-চারজন নিরাপত্তাকর্মী কিল-ঘুষি দিয়ে সিএনজি চালককে কর্পোরেশনের অফিসের নিচতলার একটি রুমে ভেতরে নিয়ে যান। সেখানে কথাবার্তার মাঝখানে ওই নিরাপত্তাকর্মী চড়-থাপ্পড়ের পর লাঠি দিয়ে মারতে শুরু করেন।
বারবার ভুল স্বীকার করলেও মারধর থেকে রক্ষা পাননি সিএনজি চালক।
তবে ভিন্ন কথা বলেন সিটি কর্পোরেশনের নিরাপত্তা প্রধান আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, প্রথমে সিএনজিটি আমাদের এক নিরাপত্তাকর্মীর পায়ের ওপর চাকা তুলে দেয়। পরে তাকে থামতে বলা হলেও সে পালিয়ে যেতে চায়। অন্যপ্রান্তে থাকা আমাদের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করে কথাবার্তা বলে ছেড়ে দেয়।
তাকে বেধড়ক মারা হয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, তেমন কিছু না। এমনিতে দু-একটা চড়-থাপ্পর মেরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সিটি কর্পোরেশনের সেই নিরাপত্তাকর্মীর নাম জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ পরে দেবেন বলে জানান। এরপর তার ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি এবং ফোন বন্ধ করে দেন।
তবে নিরাপত্তাপ্রধান সামান্য চড়-থাপ্পড়ের কথা বললেও ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে লাঠি দিয়ে বেদম মারের দৃশ্য।
নিজের দোষ স্বীকার করে সিএনজি চালক বলেন, আমি বুঝতে পেরেছি আমার অন্যায় হয়েছে। আমি উনাদের বাধা মানিনি। তাই বলে এমন নির্দয়ভাবে মারতে হবে আমাকে। এই অন্যায়ের বিচার আমি আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিলাম।
এ বিষয়ে জানতে প্রথমে কর্পোরেশনের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিনকে ফোন করা হলে তিনি প্রধান নির্বাহী (সিইও) শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। পরে সিইওকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বিএস/ডিজে