সিআরবি নিয়ে রেগে আগুন মাহতাব, পদ ছেড়ে আন্দোলন করতে বললেন নেতাদের

চট্টগ্রামের সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের বিরুদ্ধে নগর আওয়ামী লীগের পদধারী যেসব নেতা আন্দোলন করছেন, তাদের সমালোচনা করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী। দলকে পাশ কাটিয়ে ভিন্ন প্লাটফর্মে আন্দোলন করা নিয়ে এ সময় নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন কথা বলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর প্রয়াত জহুর আহমদ চৌধুরীর এই সন্তান।

বুধবার(৩১ আগস্ট) চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভা শেষে অনির্ধারিতভাবেই সিআরবি ইস্যুতে আন্দোলনে নগর আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।

দলের ইউনিট পর্যায়ের সম্মেলন ও সদস্য সংগ্রহ বিষয়ে আলোচনা করতে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সেপ্টেম্বর মাস জুড়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযান ও ইউনিট সম্মেলন করাসহ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধাপে ধাপে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রস্তুতির বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভা
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভা

মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে এই সভায় আলোচনা হয়। সেপ্টেম্বরে আমরা সদস্য সংগ্রহ ও ইউনিট পর্যায়ে সম্মেলন করবো। অক্টোবরে ওয়ার্ড পর্যায়ে সম্মেলন ও এর পর থানার সম্মেলন করা হবে। এসব শেষ হলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতিসাপেক্ষে নগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।’

সভা শেষে মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী সিআরবি ইস্যুতে আলোচনার সূত্রপাত করেন। এ সময় হাসপাতালবিরোধী আন্দোলনে দলীয় পদধারীদের সরাসরি সম্পৃক্ততার মাধ্যমে সংগঠনের নিয়মনীতির প্রতি অসম্মান করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নঈম উদ্দিন চৌধুরী চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘এটা এমন সিরিয়াস কিছু না। সিআরবি নিয়ে আমাদের দলের যারা ভিন্ন প্লাটফর্ম গড়ে আন্দোলন করছেন, তারা আওয়ামী লীগকে পাশ কাটিয়ে আন্দোলন করছেন— এমন কথা বলেছেন মাহতাব। আসলে সিআরবিতে যদি অন্যায় কিছু হয় তাহলে তো নগর আওয়ামী লীগ থেকেই এই বিষয়ে কথা বলা যেতো। সেটা বরং অনেক বেশি কার্যকর হতো। কিন্তু দলের পদে থাকা গুরুত্বপূর্ণ নেতারা দলকে পাশ কাটিয়ে আন্দোলন করেছেন এটাতেই মূলত মাহতাব উদ্দিনের ক্ষোভ। এজন্য তিনি কিছু কথা বলেছেন। তবে সেগুলো সভা শেষে ব্যক্তিগত আলোচনা ছিল।’

তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে যারা আছেন তাদের অনেকে চাইলে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলতে পারেন। সেটা না করে এভাবে কেন এটাকে ইস্যু করা হচ্ছে তা নিয়েই কথা এসেছে। এছাড়া নগর আওয়ামী লীগ থেকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া যেতো। মাহতাব বলেছেন, দলের সাথে আলোচনা না করে এমন একটা কাজ করা দলের পদধারীদের উচিত হয়নি। পরে অবশ্য ইব্রাহিম হোসেন বাবুল সহ যারা আন্দোলনে আছেন— তারা বলেছেন এসব নিয়ে পার্টির সাথে বসবেন তারা।’

অসমর্থিত একটি সূত্রে জানা গেছে এ সময় আন্দোলনকারীদের দলের পদ ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের এই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। তিনি বলেন, ‘যারা নগর আওয়ামী লীগের পদ নিয়ে সিআরবিতে হাসপাতালের বিরোধিতা করছেন, তারা পদ ছেড়ে আন্দোলন করেন।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে নঈম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টা ঠিক সেরকমও না। সভা শেষে এমনে সবাই বসে থাকার সময়ে কিছু কথাবার্তা হয়েছে। এটা সভার অংশও না। পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা আসেনি। এমনে দলীয় শৃঙ্খলার প্রশ্নে কিছু আলোচনা হয়েছে।’

সভায় বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির, সহ সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, সহসভাপতি সুনীল সরকার, ডলফিন দোভাষ, নঈম উদ্দিন চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম, বন ও পরিবেশ সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।

এআরটি/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!