সাড়ে ৪ লাখ টন চাল কেনা হচ্ছে ভারত থেকে, তৃতীয় চালান এলো চট্টগ্রামে

ভারত থেকে এবার সাড়ে ৪ লাখ টন চাল আনতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে ৩ লাখ ৬০ হাজার কেজি এবং সরকার টু সরকার চুক্তি (জিটুজি) মাধ্যমে দেড় লাখ টন চাল আমদানি করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিকভাবে মোট সাতটি টেন্ডার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই টেন্ডারের আলোকে চট্টগ্রাম বন্দরে ইতিমধ্যে ৩০ হাজার কেজি চাল পৌঁছে গেছে। বাকি চাল আসার পর্যায়ে রয়েছে। আমদানি করা চালের মধ্যে ৬০ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এবং ৪০ শতাংশ মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস হওয়ার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে নগদ ক্রয় চুক্তি (প্যাকেজ-১) এর আওতায় ১৮ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চাল নিয়ে তৃতীয় জাহাজটি চট্টগ্রামে পৌঁছেছে। মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, সহকারী রসায়নবিদ, সরবরাহকারীর প্রতিনিধি এবং সরবরাহকারী শিপিং এজেন্টের উপস্থিতিতে চালের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বুধবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে চাল খালাস শুরু হয়।

চাল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সেভেন সিস শিপিং লাইনের কর্ণধার মোহাম্মদ আলী আকবর বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠান তিন প্যাকেজের চাল সরবরাহের টেন্ডার পেয়েছে। পর্যায়ক্রমে ভারত থেকে এ চাল আনা হচ্ছে।’

এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর (বুধবার) এমভি সেঁজুতি জাহাজে ভারতের কলকাতা বন্দর থেকে সরকারি চালের প্রথম চালান নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছিল। এ জাহাজে চাল ছিল ৪ হাজার ১১৩ টন। একই জাহাজে দ্বিতীয় পর্যায়েও চাল আনা হয়েছিল। জাহাজটি বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ৪ নম্বর জেটিতে ভেড়ে।

দ্বিতীয় জাহাজটিতেও এসেছিল ৮ হাজার কেজি চাল। এবার এমভি কেরেম জাহাজে এসেছে ১৮ হাজার ৫০০ কেজি চাল।

সূত্রমতে, সরকার এর আগে দেশীয় পর্যায়ে কৃষক থেকে চাল কিনেছিল। ২০১৭ সালের পর থেকে বিদেশ থেকে কোনো চালও আমদানি করতে হয়নি সরকারকে। কৃষক থেকে কেনা চাল দিয়েই সরকারি চাহিদা মেটানো হয়েছিল।

এবারও অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ২৬ টাকা দামে ধান ও ৩৭ টাকা দামে সিদ্ধ, ৩৬ টাকা দামে আতপ চাল কেনার কর্মসূচি গ্রহণ করে সরকার। কিন্তু আমন মৌসুমে সরকারি গুদামজাতের লক্ষ্য পূরণ না হওয়া এবং স্থানীয় বাজারে চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকার চাল আমদানির দিকে ঝুঁকেছে।

চলতি বছর সাড়ে ১৯ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান-চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে সরকার। সে অনুযায়ী ৩৭ টাকা কেজি দরে মিলারদের কাছ থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, ৩৬ টাকা কেজিতে দেড় লাখ মেট্রিক টন আতপ চাল এবং সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজিতে আট লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান কেনার কথা ছিল।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, দেশে খাদ্য নিরাপত্তা মজুদ বাড়াতে এ চাল আমদানি করছে সরকার। এর মাধ্যমে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ওএমএস, ইপিওসহ সরকারের নিরবচ্ছিন্ন বিভিন্ন কর্মসূচি সফল করা হবে। ভারতের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার থেকেও চাল আমদানি করে থাকে সরকার।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জহিরুল ইসলাম খান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘সরকারের চাল আমদানি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। চাল আরও কেনা হবে । খাদ্য নিরাপত্তা মজুত রাখার জন্য সরকার এ চাল কিনছে। তবে আমদানি করলেও কৃষক থেকে চাল কেনার কার্যক্রমও চালু রেখেছে সরকার।’

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!