পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে দেওয়ার নির্দেশনা আসার পর চট্টগ্রামে সাড়ে তিন লাখ নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে।
চট্টগ্রামের নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) ও পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি ( বিজিএমইএ) কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এর মধ্যে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের চট্টগ্রামে ২ লাখ ৫০ হাজার শ্রমিক মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মাধ্যমে বেতন পাবেন। অন্যদিকে বিকেএমইএ সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ শ্রমিকও মোবাইলে বেতন গ্রহণ করবেন।
চট্টগ্রামের বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত ২৮০ কারখানার মধ্যে ২০৮ সদস্য প্রতিষ্ঠান সরকারি প্রণোদনার জন্য আবেদন করেছে। এতে আড়াই লাখ শ্রমিকের মোবাইল একাউন্ট জমা দেওয়া হয়েছে। এদের মোট শ্রমিক সংখ্যা ৪ লাখ। এর মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার জন্য আবেদন করেনি। ফলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাব নম্বরও জমা দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
এদিকে বিকেএমইএর ১৩০টি প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক রয়েছে ৩ লাখ। এর মধ্যে ১০০টি কারখানা চালু রয়েছে। এর মধ্যে ৮০টি প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ শ্রমিকের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব নম্বর জমা দেওয়া হয়েছে। তবে মোবাইল হিসাব নম্বর জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানায় উভয় সংগঠনই।
জানা গেছে, দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস ‘বিকাশে’ এপ্রিলের মধ্যে খোলা হয়েছে সাড়ে ১২ লাখ নতুন অ্যাকাউন্ট। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ‘রকেট’ এই সময়ে নতুন সাড়ে সাত লাখ এবং ডাকবিভাগের আর্থিক সেবা ‘নগদ’ সাত লাখের কাছাকাছি নতুন গ্রাহক পেয়েছে।
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে রপ্তানিমুখী শিল্পের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য সরকার পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল গঠন করে। সেই টাকা ব্যাংক হিসাব অথবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে শ্রমিকদের দেওয়া হবে।
শ্রমিকদের বেতন সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালায় বলা হয়েছে, যেসব কারখানা সচল আছে সেসব কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের চলতি এপ্রিল, মে এবং জুন মাসের বেতন-ভাতা প্রণোদনা তহবিল থেকে দেওয়া হবে।
বিকেএমইএ সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বলেন, বিকেএমইএ সদস্যভুক্ত কারখানার ১ লাখ শ্রমিক মোবাইলে বেতন গ্রহণ করবেন।
বিজিএমইএ চট্টগ্রামের পরিচালক মোহাম্মদ আতিক বলেন, অনেক শ্রমিক মা-বাবার বিকাশ বা রকেট ও নগদ একাউন্ট নম্বর জমা দিয়েছেন। এতে পরবর্তীতে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। আসলে নিজের একাউন্ট ছাড়া ওই টাকা জমা হবে না। এরপরও পরবর্তীতে জটিলতা সৃষ্টি হলে তা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। তবে একাউন্ট করার কাজটি চলমান রয়েছে। যে সব কোম্পানি প্রণোদনার আবেদন করেছে, মূলত তারাই শ্রমিকদের মোবাইল ব্যাংকিংয়ের একাউন্ট জমা দিচ্ছেন।
এএস/সিপি