আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আমদানি করা নন-ইউরিয়া সার ডিলারদের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে কৃষকদের হাতে পৌঁছানো হচ্ছে। এতে মধ্যস্বত্বভোগী ও মোকামকেন্দ্রিক সার পরিবহনকারী প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য কমতে শুরু করে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএ) নির্বাহী সচিবের একটি ক্ষুদেবার্তা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এ বার্তার কারণে মধ্যস্বত্বভোগী অসাধু চক্র ফের সক্রিয় হওয়ার সুযোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, বিএফএ নির্বাহী সচিব রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আমদাননিকারকদের একটি ক্ষুদেবার্তা পাঠান। সেখানে তিনি লেখেন, সম্মানিত বিএফএ সদস্যবৃন্দ, সার দ্রুত উত্তোলন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিগত বছরগুলির ন্যায় ডিলার কর্তৃক মোকামকেন্দ্রিক সার পরিবহনকারী প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সার উত্তোলন করতঃ কৃষক পর্যায়ে সার সরবরাহ নিশ্চিত করুন।
রিয়াজের ওই ক্ষুদেবার্তার পর মধ্যস্বত্বভোগীদের এই চক্র বিসিআইসি ডিলারের কাছ থেকে বরাদ্দের সার কিনে কালোবাজারে প্রতি বস্তায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বাড়তি দামে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় বিক্রি করছে। যার ফলে বিভিন্ন জেলায় দেখা দিচ্ছে সারের সংকট।
এর মধ্যে গতবছরের ১ ডিসেম্বর যশোরের অভয়নগর থানা এলাকা থেকে ৪ গাড়ি ডিএপি সার আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত ১৫ জানুয়ারি এক জেলা থেকে অন্য জেলায় পাচারের সময় সাত গাড়ি ডিএপি সার আটক করে যশোর জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি কৃষি মন্ত্রণালয়ের সার ব্যবস্থাপনা ও মনিটরিং অধিশাখা থেকে বেসরকারি পর্যায়ে ভর্তুকির আওতায় আমদানি করা নন-ইউরিয়া সার ডিলারদের নিকট সুষ্ঠুভাবে বিতরণের জন্য একটি চিঠি পাঠানো হয়।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দেশের প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার চাহিদা অনুযায়ী বরাদ্দকৃত সার কৃষক পর্যায়ে বিনা হয়রানিতে এবং সরকার নির্ধারিত মূল্যে প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে ডিলার নিজেই আমদানিকারক থেকে সার উত্তোলন করবে। ক্ষেত্র বিশেষে তার প্রতিষ্ঠানের উপযুক্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী তা উত্তোলন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে কর্মচারীর ছবি ডিলার কর্তৃক সত্যায়িত থাকতে হবে। এছাড়া মধ্যে স্বত্বভোগী অথবা অন্য কোনো ব্যক্তি আমদানিকারক বা ডিলার হতে সার উত্তোলন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করণের জন্য কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, বিএফএ’র নির্বাহী সচিব রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সুবিধাভোগীদের একজন। তার সঙ্গে এ কাজে যুক্ত আছে সংগঠনের আরও কিছু নেতা।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটন এক সময় বিএফএ’র সভাপতি ছিলেন। প্রায় ১৭ বছর তিনি দায়িত্ব পালনকালে তিনি বিএডিসি এবং বিসিআইসি’র প্রায় ৩ লাখ মেট্রিক টন সরকারি সার আত্মসাৎ করেন। দীর্ঘ ওই সময় পোটনের সচিব ছিলেন রিয়াজ উদ্দিন আহমদ।
ক্ষুদেবার্তার বিষয়ে জানতে বিএফএ’র নির্বাহী সচিব রিয়াজ উদ্দিন আহমেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।