সাত গাড়িসহ ৫০০ কনটেইনার পণ্যের নিলাম এবার চট্টগ্রাম কাস্টমসে

চট্টগ্রামে এবার ৫০০ কনটেইনার পণ্যের বড় নিলাম হতে যাচ্ছে। গত নিলামের মতো এবারও প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে কেমিক্যাল সামগ্রীকে। এর পাশাপাশি নিলামে তোলা হবে সাধারণ গাড়ি থেকে বিলাসবহুল গাড়ি, পেঁয়াজ, রসুন, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীসহ আরও নানা পণ্য। বিভিন্ন সময় আটক করা পণ্য ছাড়াও আমদানি করে কাস্টমস থেকে দীর্ঘদিন ধরে ছাড়িয়ে না নেওয়া পণ্যগুলোই চট্টগ্রাম কাস্টমসের এই নিলামে তোলা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের বড় এই নিলামটি অনুষ্ঠিত হবে বুধবার (৭ অক্টোবর)। এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর ৪৯টি লট নিয়ে বিশেষ নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ৪৩ লটে ছিল কেমিক্যাল সামগ্রী। তারও আগে আগস্ট মাসে ১৬৪টি লটে ২০০ কনটেইনার পণ্যের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

জানা গেছে, এবার ২১৩টি লটে ৫০০ কনটেইনার পণ্য নিলামে তোলা হবে। কেমিক্যাল সামগ্রী, গাড়ি, পেঁয়াজ, রসুন, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ছাড়াও এসব পণ্যের মধ্যে থাকছে স্টিল পণ্য, গার্মেন্টস এক্সেসরিজ, বিভিন্ন ধরনের কাপড়, পেপার ও পেপারসামগ্রী, হার্ডওয়্যার, টেক্সটাইল মেশিনারিজ, সিরামিক আইটেমসহ নানা ধরনের পণ্য।

মোট সাতটি গাড়ি এবার নিলামে উঠতে যাচ্ছে। এর মধ্যে যেসব গাড়ির তথ্য পাওয়া গেছে, তার মধ্যে নিশান মটর কর্পোরেশনের এক্স-ট্রেইল গাড়ি রয়েছে তিনটি। এর একটি হাইব্রিড। চট্টগ্রাম বন্দরের এফ-শেডে থাকা এই গাড়িগুলোর মধ্যে চার সিলিন্ডারের কালো রঙের এক্স-ট্রেইল গাড়িটি ২০১৩ সালে জাপানে তৈরি। নিলামে উঠবে পার্ল কালারের আরও একটি এক্স-ট্রেইল গাড়ি। নিশান মটর কর্পোরেশনের ওই গাড়িটিও ২০১৩ সালে জাপানে তৈরি। এছাড়া চার সিলিন্ডারের সাদা রঙের একটি এক্স-ট্রেইল (হাইব্রিড) গাড়ি নিলামে যাচ্ছে। সেটি ২০১৫ সালে জাপানে তৈরি।

গাড়ির মধ্যে আরও রয়েছে একটি হিনো রেইঞ্জার ডাম্প ট্রাক। অফ হোয়াইট রঙের সিক্স-হুইলার গাড়িটিও জাপানে তৈরি। এছাড়া হিনো (মডেল SH1EFX) গাড়ি রয়েছে আরও একটি। সাত সিলিন্ডারের গাড়িটি সবুজ রঙের। জাপানে সেটি তৈরি হয়েছিল ২০০৭ সালে।

অন্য গাড়ির মধ্যে টয়োটা অ্যাকোয়া হাইব্রিড (মডেল DAA-NHP10-AHXNB) গাড়ি রয়েছে একটি। ২০১৪ সালে জাপানে তৈরি গাড়িটি নীল রঙের। চট্টগ্রাম বন্দরের পি-শেডে থাকা অপর গাড়িটি ডাইহাটসুর সাদা রঙের হাইজেট মিনি ফ্রিজার ভ্যান।

এবারের নিলামে লটের সংখ্যা যেমন বেশি, তেমনি কনটেইনারও বেশি। মোট কত কনটেইনার হবে সেই তথ্য হিসাব রাখে না নিলামকারী প্রতিষ্ঠান। তবে লট করা হয়েছে ২১৩টি। নিলামকারী প্রতিষ্ঠানের মতে কনটেইনার ৫০০-এর কম হবে না। একটি লটে এক থেকে তিন কনটেইনার পণ্যও রয়েছে। কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রও এ তথ্য চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছে।

এবারের নিলামে বন্দরের পি-শেডে থাকা বিপজ্জনক পণ্যের ২৫টি লট রয়েছে। গত মাসে পি শেডে থাকা বিপজ্জনক পণ্যের ৪৩টি লটসহ ৪৯টি লটের বিশেষ নিলাম আয়োজন করেছিল কাস্টমসের নিলাম শাখা।

জানা গেছে, নিলামের জন্য ইতিমধ্যে দরপত্রও আহবান করা হয়েছে। উপযুক্ত দরপত্র প্রদানের মাধ্যমে এসব পণ্য ছাড় দেওয়া হবে।

কাস্টমস নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার ফয়সাল বিন রহমান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজে বিভিন্ন সময় আটক করা ও খালাস না করা পণ্য পড়ে থাকে দিনের পর দিন। পণ্যগুলো আমদানিকারক গ্রহণ না করলে সেগুলো বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নিলামে তোলা হয়।

এই ডেপুটি কমিশনার বলেন, ‘নিলামে অংশগ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা (প্রশাসন), জেলা প্রশাসকের দপ্তর এবং যুগ্ম কমিশনার (সদর), শুল্ক আবগারি ও ভ্যাট কমিশনারেট (ঢাকা দক্ষিণ) এর কার্যালয়ে নির্ধারিত টেন্ডার বক্স থাকবে। চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের নিলাম শাখা এবং ঢাকা ভ্যাট কমিশনারেট কার্যালয়ে একযোগে টেন্ডার বক্স খোলা হবে।’

চট্টগ্রাম কাস্টমসের পক্ষে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান কেএম করপোরেশনের ম্যানেজার মোরশেদুল আলম বলেন, বুধবার বিকাল তিনটায় ঢাকা ও চট্টগ্রামে একযোগে গোপন দরপত্র খোলা হবে। এদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত দরপত্র জমা দিতে পারবেন বিডাররা।

এএস/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!