সাতকানিয়ায় বিচারাধীন জায়গায় গায়ের জোরে নির্মিত হচ্ছে স্থাপনা

প্রতিবাদ করতেই রড দিয়ে নারীর ওপর হামলা

যে জায়গার বিরোধ নিয়ে দীর্ঘ ২০ বছর ধরে আদালতে মামলা চলছে, রয়েছে নিষেধাজ্ঞা— বিচারাধীন সেই জায়গায় প্রভাব খাটিয়ে জোর করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে। নির্মাণ কাজ বন্ধে গত ৬ জানুয়ারি চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতে (মিস মামলা নং (১৮/২০) ফৌজদারি ১৪৫ ধারা) এবং গত ১৩ জানুয়ারি সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ১৫১ ধারায় নিষেধাজ্ঞা দিলেও তার তোয়াক্কা করছে না একটি পক্ষ। বরং হুমকি-ধমকি ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে জোরপূর্বক রাতে রাতে ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

জানা গেছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞার জের ধরে অভিযুক্ত ইউসুফ ও সামশুল আলম দলবল নিয়ে হামলা করে ভিকটিমের বাড়িতে। হামলায় ভিকটিমদের মারধর ও গৃহকর্মী আমেনা বেগম (৪০) এর মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। এ ঘটনায় আমেনা বেগমের স্বামী আবুল বশর বাদি হয়ে গত ৭ জানুয়ারি ইউসুফ ও সামশুল আলমের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার বাদি পক্ষের আবুল বশর জানান, সাতকানিয়া উপজেলার তেমুহানী মৌজার ৮১৮নং আর এস খতিয়ানের ২৩০৭ এবং ৩৬৫৮ দাগের ১৫ শতক জায়গার বিরোধ নিয়ে ২০০০ সালে আসামিপক্ষের বিরুদ্ধে সাতকানিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। সে মামলা আদালতে এখনো বিচারাধীন।

সাতকানিয়ায় বিচারাধীন জায়গায় গায়ের জোরে নির্মিত হচ্ছে স্থাপনা 1

বাদিপক্ষ আব্দুল গফুর জানান, বাপ দাদার ভিটে রক্ষা করতে খেয়ে না খেয়ে অনেক কষ্টে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চালিয়ে আসছি। সে মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন। নিষ্পত্তি না হওয়ার আগেই বিবাদিপক্ষের বিদেশফেরত দুই ভাই মৃত নুর নবীর দুই ছেলে মো. ইউসুফ ও সামশুল আলম টাকার প্রভাব খাটিয়ে অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের নিয়ে রাতে রাতে জোরপূর্বক জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানায় একাধিকবার অভিযোগসহ গ্রাম্য আদালত, চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে জানালেও কোনো সুরাহা হয়নি। বরং এসবকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা প্রকাশ্যে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ঘেরাও করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

জীবনের নিরাপত্তা ও ভূমিদস্যুদের হাত থেকে বাপ-দাদার শেষ সম্বলটুকু রক্ষায় প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।

অভিযুক্ত ইউসুফ বলেন, ‘যারা মামলার বাদি তারা নিজেরাই জায়গা দখল করে ঘর করেছে আরও ১ বছর আগে। এখন আমরা ঘর করলে কেন সমস্যা হবে?’ হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’

আদালতের আদেশ অমান্য করে ভবন নির্মাণে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ বাদিপক্ষের। এ ব্যাপারে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিউল আজমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই আদালত কর্তৃক নিষেধাজ্ঞার নোটিশ তাদেরকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপরেও শান্তিশৃঙ্খলা বজায় না রাখলে এবং কাজ বন্ধ না করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm