চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় সায়মা সুলতানা সোনিয়ার (২৩) মৃত্যুর ঘটনা কী হত্যা নাকি আত্মহত্যা সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এলাকায়। নিহতের পরিবার দাবি করছে সোনিয়াকে নিজের গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে মারাত্মক প্ররোচনা দিয়েছিলো তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
প্রসংগত,পারিবারিক সমস্যার জেরে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম গাটিয়াডেঙ্গায় সায়মা সুলতানা সোনিয়া (২৩) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত সোনিয়া এওচিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম গাটিয়াডেঙ্গা গ্রামের মো. মহিউদ্দিনের স্ত্রী।ঘটনার পর তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন দাবি করেছিলেন— স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার কারণে সোনিয়া আত্মহত্যা করেন।
এদিকে নিহতের পরিবার দাবি করছে, শ্বশুরবাড়িতে সোনিয়াকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো।
এ বিষয়ে সোনিয়া আক্তারের পিতা মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে ৬ বছর আগে। তার ৫ বছর ও ৩ বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের আত্যাচারে সে অতিষ্ঠ ছিল।ঘটনার দিনও আমি তাই বলেছি।’
নিহতের ভাই মো.ইমন জানান,‘আমার বোনের জা ঝগড়ার সময় বলেছিলো হয় তোকে জামাই থেকে তালাক করাব নতুবা মেরে ফেলব। আমার বোনের ফাসঁ লাগাটা দেখে এওচিয়ার চেয়ারম্যান সেই স্পটেই বলেছিলেন এটা গলা টিপে হত্যা। আমরা প্রশাসন ও এওচিয়ার চেয়ারম্যানের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি এ ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করুন।’
মো.ইমন আরও বলেন, এ হত্যার মূল নায়ক হচ্ছে এওচিয়ার ৮নম্বর ওয়ার্ডের চকিদার আমার বোনের আপন ভাসুরের ছেলে ইউনুস চকিদার। আমার বোনের জা বুলু আক্তার ও এটাতে জড়িত। কারন মৃত্যুর আগে তারা বেশকয়েকবার বোনকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল।’
এ বিষয়ে নিহতের ছোট ভাই ইমন বলেন, ‘আমরা আশা করি ময়নাতদন্তে সত্য কী সেটা ভেসে ওঠবে।’
পশ্চিম গাটিয়া ডেঙ্গার বাসিন্দা ইসলাম মিয়া (৬৫) বলেন, আমার সামনে সোনিয়ার স্বামী মহিউদ্দিনকে ফোন করে বলেছে যে, ‘তুই ঝামেলা না করে এসে দাফন করে ফেল।’ আমরা এ কথার প্রেক্ষিতে এটাকে হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করেছি।’
এলাকার বাসিন্দা রুবেল নাথ বলেন, ‘এটি হত্যা মনে হয়েছে। এমন বক্তব্য সেদিনও দিয়েছিলাম গণমাধ্যমে। হত্যাকাণ্ডকে ঢাকতে জন্য গলায় ফাঁস লাগিয়েছে বলেই মনে হয়েছে।’
এ বিষয়ে এই মামলার তদন্তকারী এস আই মাহবুব চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি গিয়ে লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পেয়েছি এবং আত্মহত্যা মনে হয়েছে। এরপরও বাকিটা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না।
আত্মহত্যা করতে প্ররোচনা ছিলো কিনা বা এটি পরিকল্পিত হত্যাকে ঢাকতে করা হয়েছে কী না এ বিষয়ে কোন প্রশাসনের কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
এসএস