চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় মো. রিফাত নামে এক যুবককে গুলি ও ছুরি মারার ঘটনায় ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এর আগেও তার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।
গত ৭ নভেম্বর সাতকানিয়া থাকায় এ মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর ভাই মো. ইউসুফ। ২৯ অক্টোবর রিফাত ও তার বন্ধুর ওপর হামলায় চালায় দুর্বৃত্তরা। এর আগে ২১ অক্টোবরও এক দফায় রিফাতের ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা।
মামলার আসামিরা হলেন—সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা আবদুল মাবুদ (৩৮), মো. নিজাম (৪৫), মো. হেলাল (৩০), ফরহাদ হোসেন (৪০), মো. এনাম (৩২), মো. মন্নান (৪২)। এছাড়া আরও ৫-৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলায় বাদি মো. ইউছুফ উল্লেখ করেন, চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় ভিকটিম রিফাতকে দু’দফা ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। প্রথম দফায় গত ২১ অক্টোবর রাত ৯টায় সাতকানিয়া থানার ৪ নম্বর কাঞ্চনা ইউপির দক্ষিণ কাঞ্চনার ফুলতলা বাজারের উত্তর পাশে খুপি পাড়ার টেক নামক স্থান দিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে আমার ভাই রিফাতের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে আসামিরা। মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মারধর করে এবং মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে। এ ঘটনার পরপরই আমার ভাই রিফাত বিবাদিদের বিরুদ্ধে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিকট বিচার দেয়। এতে আসামিরা আমার ভাইয়ের ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়। এরপর এলাকার মানুষকে বিচার দেওয়ায় দ্বিতীয় দফায় আবারও হামলার শিকার হন রিফাত।
ভিকটিমের ভাই এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, গত ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় ৭টার আমার ছোট ভাই রিফাত তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন খোকনকে (৪০) নিয়ে চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন। ওইসময় আসামিরা দুটি নম্বরবিহীন সিএনজিতে এসে রিফাতকে অর্তকিত মারধর শুরু করে। ১ নম্বর আসামি আবদুল মাবুদ তার হাতে থাকা বন্দুক দিয়ে আমার ভাই রিফাতের ডান পায়ে গুলি করে। গুলিটি লাগে রিফাতের ডান পায়ের হাঁটুর নিচে। এরপর আসামি নিজামের হাতে থাকা শর্টগান দিয়ে রিফাতকে গুলি করলে সেটি তার ডান পায়ের হাঁটুতে লাগে। এরপর আসামি মো. হেলাল তার হাতে থাকা একটি ধারালো কিরিচ দিয়ে আমার ভাইকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। সেই কোপটা গিয়ে লাগে রিফাতের কপালে। গিয়াস উদ্দিন খোকন আমার ভাইকে উদ্ধারের জন্য গেলে আসামিরা তাকেও মেরে গুরুতর আহত করে।
আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা আমার ভাই রিফাতকে হুমকি দিয়ে বলে, কাজে বাধা দিলে কিংবা এই ঘটনায় কোনো মামলা করলে আমার ভাইকে প্রাণে হত্যা করে ফেলবে। এরপর রিফাতকে উদ্ধার করে প্রথমে চট্টগ্রাম নগরের ন্যাশনাল হাসপাতালে এবং পরে অবস্থা অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বর্তমানে রিফাত চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী রিফাত চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় আমাকে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করলে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তাদের কাছে অবৈধ অস্ত্র আছে। তাদের প্রশাসনের লোকজন ধাওয়া দিয়েছিল, কিন্তু ধরতে পারেনি।’
আরএ/ডিজে