সাড়ে ৩ বছর পর বাবুল আক্তারের জামিন স্ত্রী খুনের মামলায়

সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন চেয়ে বাবুলের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে রুলসহ এ আদেশ দিয়েছেন। বাবুলকে কেন নিয়মিত জামিন দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

হাইকোর্টে বাবুলের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুরুল আলম।

এর আগে মিতু হত্যামামলায় নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে বিফল হন বাবুল আক্তার। সর্বশেষ গত বুধবার (১৪ আগস্ট) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে জামিন আবেদন করেছিলেন এসপি বাবুল আক্তার। তবে ১৮ আগস্ট বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন। এরপর হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন বাবুল।

বাবুলের আইনজীবী শিশির মনির পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ মামলায় বাবুলের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেই। তিন বছর সাত মাস ধরে তিনি কারাগারে। এসব বিবেচনায় বাবুলকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে। জামিনের আদেশ নিম্ন আদালতে যাওয়ার পরে বাবুলের কারামুক্তিতে বাধা থাকবে না।’

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

তবে মামলায় স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একইদিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন বাবুল।

এদিকে প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই। তবে পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। গত বছরের ১৩ মার্চ আলোচিত মামলাটিতে বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।