সাঙ্গু নদীর তীরে মা কাঁদছেন নিখোঁজ দুই সন্তানের খোঁজ চেয়ে

বান্দরবা‌নের রোয়াংছ‌ড়িতে ঝরনার পাশে সাঙ্গু নদীতে গোসল কর‌তে নেমে নিখোঁজ দুই ভাই-বোনের এখনও খোঁজ মেলেনি। শুক্রবার (২৪ ‌ডি‌সেম্বর) বিকেল থেকে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা ঘটনাস্থলে কিছুক্ষণ উদ্ধারকাজ চালানোর পর নদীর পানি অতিরিক্ত ঠান্ডা হওয়ার কারণে উঠে আসতে হয়। শনিবার সকাল থেকে আবার উদ্ধারকাজ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

নিখোঁজ এই ভাইবোন হলেন— নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার জ‌হিরুল ইসলামের ছেলে আহনাফ আকিব (২২) ও তার বোন আদ‌নিন (১৬)।

শুক্রবার (২৪ ‌ডি‌সেম্বর) দুপু‌র ২টার দিকে বান্দরবানের রোয়াংছ‌ড়ির তারাছা ইউ‌নিয়‌নের বেতছড়ার বাধরা ঝর্ণার পা‌শে নদী‌তে এ ঘটনা ঘ‌টে‌। এ ঘটনায় নদীর স্রোতে ভেসে গিয়ে মারিয়া ইসলাম (১৯) নামের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়।

ঘটনার পর সন্তানদের খোঁজে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে ছুটে আসেন আকিব ও আদনিনের মা সাইদা শিউলী ও মামা শামীমসহ আরও কয়েকজন। শুক্রবার রাত আটটার দিকে উদ্ধারকাজ বন্ধ রেখে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা ঘটনাস্থল ছেড়ে গেলেও গভীর রাতে বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর তীরে দাঁড়িয়ে ছিলেন মা ও অন্য স্বজনরা।

ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা জানান, শুক্রবার নদীর পানি অতিরিক্ত ঠান্ডা হওয়ার কারণে রাত আটটার পর উদ্ধারকাজ বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় ছিল না। তবে শনিবার সকাল থেকে আবার উদ্ধারকাজ শুরু হবে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বান্দরবা‌ন থেকে ১০ পর্যটক নৌকা‌তে ক‌রে সাঙ্গু নদীপথে বেতছড়ায় বেড়া‌তে আসেন। এ সময় তাদের মধ্যে আট জন ‌বেতছড়ার বাধরা ঝর্ণার পাশে নদী‌তে গোসল কর‌তে নামলে ওই আট জনই নদীর স্রোতে ভেসে যায়। ছয় জনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করলেও এখন সন্ধান মেলেনি দুই ভাইবোনের। হাসপাতালে আনার পথে মারিয়া ইসলাম নামে এক তরুণী পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, সাঁতার না জেনে নদীর পানিতে নামার কারণে এই পর্যটকরা স্রোতের তোড়ে আর সামলে উঠতে পারেননি।

ঘটনার পর বান্দরবানে ছুটে আসা নিখোঁজ দুই ভাইবোনের স্বজনরা জানান, বুধবার (২২ ডি‌সেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে খালা‌তো ও মামাতো ভাইবোনসহ তারা ১০ জন বান্দরবান আসেন। ওইদিন সকালে তারা বান্দরবা‌নের হো‌টেল দ্য প‌্যারাডাইসে ওঠেন। গত দুদিন ধরে নীলাচল, মেঘলা, নীল‌গি‌রিসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণে যান তারা। শুক্রবার রাতের বাসেই তাদের নারায়ণগঞ্জে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। এ কারণে সকালে নৌকা ভ্রমণে বের হয়েছিলেন তারা।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!