সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার দাবি সিইউজের
‘প্রেসক্লাব দখল ও সিইউজের অফিসে তালা সরকারের জন্য সুখকর নয়’
চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রামে পেশাদার সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) নেতারা।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে তারা বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলা রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রের ওপর হামলার শামিল।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিইউজে সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ।
সিইউজে সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী বলেন, ৫৪ বছরের ইতিহাসে গণমাধ্যম তথা সাংবাদিকদেরকে কখনো রাষ্টযন্ত্রের সাথে, কখনো রাজনৈতিক পেশী শক্তির সাথে লড়াই করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়েছে। আজকের দিনেও এই কঠিন বাস্তবতার কোনো ব্যতিক্রম হয় নি। সাংবাদিক সমাজ এই অবস্থা থেকে উত্তরণ চায়। এটা দেশ এবং সমাজের স্বার্থে। গণমাধ্যম তথা সাংবাদিকদের ন্যায্য দাবি ও নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সেই রাষ্ট্রের চাকুরে হিসেবে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা এক্ষেত্রে সবার আগে।
রিয়াজ হায়দার চৌধুরী আরো বলেন, চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের দ্বিতীয় আবাসস্থল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব দখল করা হয়েছে। ৬৪ বছরের সংগঠসন সিইউজের কার্য়ালয়েও তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের চট্টগ্রামের সন্তান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে থাকা সরকারের ভাবমূর্তির জন্য এটা মোটেও সুখকর নয়। তিনি অবিলম্বে দুই সাংবাদিকদের উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সাধারণ সম্পাদক সবুর শুভ বলেন, আমার দুই সাংবাদিক সহকর্মীর উপর কারা হামলা করেছে তা আমরা জানি। প্রশাসনেরও অজানা নয়। এসব সন্ত্রাসী বিগত সময়ে তৎকালীন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়েছে। পাহাড় ও সরকারি জায়গা দখলসহ নানা অপকর্মের মাধ্যমে জঙ্গল সলিমপুরকে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। এখনো তারা রূপ পাল্টিয়ে আরেক রাজনৈতিক দলের নেতার আশ্রয়ে এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড অব্যাহত রেখেছে। অবিলম্বে হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উঠানে গিয়ে দাঁড়াবে।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি শহীদ উল আলম বলেন, সাংবাদিকরা দেশ, মানুষ ও গণতন্ত্রের জন্য কাজ করেন। সেই সাংবাদিকদের উপর হামলা মানেই রাষ্ট্র ও গণতন্ত্রের উপর হামলা। এক্ষেত্রে হামলাকারীদের ছাড় দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সিইউজের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমদ ও নাজিমুদ্দিন শ্যামল, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, সিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিফ সিরাজ, প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক যীশু রায় চৌধুরী, চট্টগ্রাম টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রুনা আনসারী, টিভি ক্যামেরা জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি শফিক আহমেদ সাজীব প্রমুখ।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটির সভাপতি খোরশেদুল আলম, সিইউজের সাবেক সভাপতি তপন চক্রবর্তী, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব মহসিন কাজী, সিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সিইউজের সিনিয়র সহ-সভাপতি স ম ইব্রাহিম, ডেইলি স্টারের ব্যুরো চিফ শিমুল নজরুল, আমাদের সময়ের ব্যুরো চিফ হামিদ উল্লাহ, সিইউজের যুগ্ম সম্পাদক ওমর ফারুক, অর্থ সম্পাদক সোহেল সারওয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক সুবল বড়ুয়া, সিইউজের টিভি ইউনিট প্রধান তৌহিদুল আলম, প্রেসক্লাবের অর্থ সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম শামীম, নাগরিক টিভির ব্যুরো প্রধান এ কে আজাদ, সিইউজের প্রচার সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য আহসান হাবিবুল আলম, প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য আইয়ুব আলী প্রমুখ।
গত রোববার (৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নগরীর জঙ্গল সলিমপুরে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন এখন টিভির ব্যুরো প্রধান হোসাইন আহমেদ জিয়াদ ও ক্যামেরা জার্নালিস্ট পারভেজ রহমান। এসময় সন্ত্রাসীরা সাংবাদিকদের ক্যামেরা ও মোবাইল ফোন ভাঙচুর করে এবং আইডি কার্ড ছিনিয়ে নেয়।




