সহকর্মীকে লাঞ্ছিত করার বিচার না পেয়ে পদ ছাড়লেন চট্টগ্রামের হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক সুবির দাশ।
পদত্যাগপত্রে পারিবারিক কারণে পদত্যাগের বিষয় উল্লেখ থাকলেও মূলত সহকর্মীকে ছাত্রলীগ নেতারা লাঞ্ছিত করার বিচার না পাওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে মহসিন কলেজের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে কলেজের অধ্যক্ষ মো. কামরুল ইসলামকে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন শিক্ষক সুবীর দাশ। তিনি বলেন, ‘পারিবারিক চাপে পদত্যাগ করেছি। এ বিষয়ে আর বেশি কিছু বলা আমার পক্ষে আপাতত সম্ভব না।’
তবে এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষের মন্তব্য জানতে ফোন করা হলেও নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
সুবীর দাশ সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের গনিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। একই কলেজের শিক্ষক পরিষদের সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে মহসিন কলেজের একজন শিক্ষক জানান, গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষার হলে এক শিক্ষার্থীকে অসদুপায় অবলম্বন করতে বাধা দেওয়ায় কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী নাঈম দায়িত্বরত শিক্ষক মুজাহিদুল ইসলামকে পিটিয়ে কলেজ থেকে বদলি করার হুমকি দেন।
ওই ঘটনায় শিক্ষক নেতা হিসেবে তৎপর ছিলেন সুবীর দাশ। নাঈম বারবার শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার বিষয়টি অধ্যক্ষের নজরে এনে তার শাস্তি দাবি করেন সুবির দাশ।
তবে কলেজ অধ্যক্ষ শিক্ষকদের দাবি উপেক্ষা করে ছাত্রলীগ নেতা নাঈমের পক্ষেই কথা বলেন। এমনকি এতবড় ঘটনায় শুধুমাত্র ‘সরি’ বলিয়ে ঘটনাটি শেষ করার চেষ্টা করেন।
শিক্ষক মুজাহিদকে হুমকির বিষয়ে নাঈমের কাছে জানতে চাইলেও নাঈম সুবির দাশের সাথে খারাপ আচরণ করে। সহকর্মীর অপমানের বিচার না পাওয়ায় তিনি পদত্যাগ করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে সুবীর দাশ বলেন, ‘মুজাহিদুল ইসলামের সাথে অন্যায় হয়েছে। আমি তার প্রতিকার চেয়েছি। কিন্তু কিছুই করতে পারিনি। তার সাথে পদত্যাগের সম্পর্ক নেই৷ আমি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছি।’
তবে মহসিন কলেজে শিক্ষক নির্যাতনের বিষয়ে একটি সংবাদ প্রচার করা হয় চট্টগ্রাম প্রতিদিনে। ওই সংবাদে আজ (সোমবার) সুবির দাশের পদত্যাগ করার সম্ভাবনার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
এদিকে শিক্ষক নির্যাতন, বদলির হুমকিতে নিজের কোন দোষ নেই বলে জানান অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা কাজী নাঈম। তিনি বলেন এ ঘটনার সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) মহসিন কলেজে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় চট্টগ্রাম সরকারী কমার্স কলেজের এক ছাত্রকে দেখে লিখতে না দেওয়ায় মুহসিন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়কের রোষানলে পড়তে হয় পরিদর্শক ও কলেজটির হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষককে মো. মুজাহিদকে।
বিএস/এমএফও