চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সরিষা বীজ ঘোষণায় পপি বীজ আমদানি করার সেই আমদানিকারক ছৈয়দ আজাদ আহমেদ ও ওই চালান খালাসের দায়িত্বে থাকা সিএন্ডএফ এজেন্টের মালিক আকিল চন্দ্র মন্ডলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে চট্টগ্রামের বন্দর থানায়।
বুধবার (২ জুন) রাতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা তাকমিম হাসান বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
তিনি জানান, পুরান ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আজমিন ট্রেড সেন্টার সরিষা বীজ ঘোষণায় মালয়েশিয়া হতে দুই কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। আমদানিকারকের মনোনীত সিএন্ডএফ এজেন্ট হটলাইন কার্গো ইন্টারন্যাশনাল পণ্য চালানটি খালাসের লক্ষ্যে এ দপ্তরে বিল অব এন্ট্রি (নং- সি- ৬৫১৭৮০, ১৮ এপ্রিল) দাখিল করে এবং ঘোষিত পণ্য সরিষা বীজের শুল্ক বাবদ ১ লাখ ৪২ হাজার ৪৯৭.৩৬ টাকা পরিশোধ করে। ফলে মিথ্যা ঘোষণা, নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি ও মানি লন্ডারিংয়ের বিষয় উল্লেখ্য করে ফৌজদারি মামলা করা হচ্ছে চট্টগ্রামের বন্দর থানায়।
এদিকে, বুধবার (২ জুন) সিএন্ডএফ এজেন্ট হটলাইন কার্গো ইন্টারন্যাশনালের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে।
জানা যায়, শুল্ক-করাদি পরিশোধ শেষে পণ্যচালানটি খালাস গ্রহণের কার্যক্রম শুরু করে সিএন্ডএফ এজেন্ট। কিন্তু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খালাস প্রক্রিয়া স্থগিত করে কাস্টম হাউস চট্টগ্রাম এর অডিট, ইনভেস্টিগেশন এন্ড রিসার্চ (এআইআর) টিম। পরে শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় আমদানিকারকের ঘোষিত ৫৪ টন সরিষা বীজের স্থলে ১২ টন সরিষা বীজ এবং ৪২ টন আমদানি নিষিদ্ধ পপি বীজ পাওয়া যায়।
এআইআর শাখার সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, বুধবার রাতে আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে বিষয়টি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
তিনি জানান, একই রকম লেখা ও একই রঙের বস্তায় কন্টেইনারের সামনের অংশে সরিষা বীজ ও পিছনের দিকে পপি বীজ পাওয়া যায়। পণ্যের বর্ণনা সম্পর্কে অধিকতর নিশ্চয়তার লক্ষ্যে পণ্যের নমুনা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ঢাকায় রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। পরীক্ষা শেষে পাঠানো নমুনাকে পপি বীজ হিসেবে চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দেয় সরকারি প্রতিষ্ঠানটি। আফিমসহ বিভিন্ন রকমের মাদক তৈরিতে পপি বীজ ব্যবহার করা হয় বলে তা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার।
আন্তর্জাতিক বাজার দর অনুযায়ী ৪২ টন পপি বীজের বিক্রয় মূল্য প্রায় ১৫ কোটি টাকা হলেও সরিষা বীজের মূল্য বাবদ এলসির মাধ্যমে ২২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটি।
এএস/এসএ