সততার অঙ্গীকার থাকলে এই বাজেট আক্রান্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে: ড. সেলিম উদ্দিন

বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. সেলিম উদ্দিন বলেছেন, বিশ্বব্যপী মহামারী কোভিড-১৯ এর প্রভাবে আমাদের অর্থনীতির প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে এক অস্বাভাবিক, অসাধারণ, অস্থির , অনিশ্চিত, বিপদজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে ২০২০-২১ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটটি ঘোষিত হয়েছে। প্রস্তাবিত এই বাজেটটি করোনা দূর্যোগ মোকাবেলায় বিগত কয়েক মাসে গৃহিত বিভিন্ন নীতি, কৌশল এবং প্রণোদনাকে বিশেষ বিবেচনায় রেখে জীবন জীবিকাকে প্রাধান্য দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ অর্থনীতিকে পুনরহদ্ধারের অন্যতম উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে প্রণয়ন করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ড. মো. সেলিম উদ্দিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগেরও অধ্যাপক।

তিনি আরও বলেন, ঘোষিত প্রস্তাবিত বাজেট ২০২০-২১ এর মৌলিক অঙ্গীকারগুলোর মধ্যে অন্যতম হল করোনা দূর্যোগ মোকাবেলার জন্য বিভিন্ন নীতি কৌশলের সঠিক বাস্তবায়ন। যেমন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার বিশাল প্রণোদনার দ্রুত বাস্তবায়ন, সরকারি ব্যয়েকর্ম সৃজনকে প্রধান্য, বিলাসী ব্যয় হ্রাস ও নিরুৎসাহিত করা, স্বল্পসুদে ঋণ সুবিধা প্রবর্তন করে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পুনরুজ্জীবিত করা, সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের আওতা বৃদ্ধি এবং বাজারে মুদ্রা সরবরাহ বৃদ্ধি করা।
উল্লিখিত বিষয় সমূহকে অধিক গুরত্ব দিয়ে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষৎ পথ পরিক্রমা’ শিরোনামের প্রস্তাবিত ২০২০-২১ বাজেটটি ১১ জুন, ২০২০ মহান জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন। এই সরকারের প্রতিটি বাজেটই রেকর্ড ভেঙ্গেছে। এবার তৃতীয় মেয়াদের দ্বিতীয় বাজেট ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। বাজেট ২০২০-২১ এ মোট ব্যয় প্রাক্কলন হয়েছে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। যেটি সংশোধিত ২০১৯-২০ থেকে ৬৬ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা বা ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশী। উল্লেখ্য যে, ২০১৯-২০ এর পরিমাণ ছিল ৮০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা বা ১৮ দশমিক ২ শতাংশ বেশী। একই ভাবে মোট রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। যেটি সংশোধিত ২০১৯-২০ অর্থসাল থেকে ২৯ হাজার ৯৩১ বা ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশী। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের মোট রাজস্ব প্রাক্কলন পূর্ববর্তী সংশোধিত বাজেটটির তুলনায় ৬১ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা বা ১৯ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশী। মোট ব্যয় এবং রাজস্ব প্রাক্কলনের সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণে বলা যায় যে, মোট ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি রাজস্ব প্রবৃদ্ধির তুলনায় দ্বিগুন হয়েছে এবং মোট বাজেট ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যেটি জিডিপির ৬ শতাংশ।

ড. সেলিম বলেন, ২০১৯-২০ সংশোধিত বাজেটে ঘাটতি দাঁড়াবে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। যেটি জিডিপির ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে বহি:উৎস হতে ৮০ হাজার ১৭ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস হতে ১ লাখ ৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা যার মধ্যে ব্যাংক ঋণ ৮৪ হাজাদ ৯৮০ কোটি টাকা ঘাটতি অর্থায়নের প্রাক্কলন করা হয়েছে। ২০১৯-২০ সংশোধিত বাজেট বহি:উৎস হতে ৫৬ হাজার ১৬৩ কোটি এবং অভ্যন্তরীণ উৎস হতে ৯৭ হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে ব্যাংক ঋণ ৮২ হাজার ৪২১ কোটি টাকার অর্থায়ন পুন:প্রাক্কলন করা হয়েছে। অথচ ২০১৯-২০ এ ঘাটতি অর্থায়নে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণের প্রাক্কলন ছিল ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, ঘাটতি অর্থায়ন বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে, বহি:উৎস হতে অর্থায়ন টার্গেট অনুযায়ী না হওয়ায় এবং রাজস্ব আদায় ঘাটতির কারণে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বাজেটের টার্গেট অতিরিক্ত ঋণ নিয়ে ঘাটতি অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে হয়, তাই বাজেট ২০২০-২১ এ ঘাটতি অর্থায়ন ১ লাকজ ৯০ হাজার কোটি টাকা একটি বিরাট চ্যালেঞ্জিং। কেননা অভ্যন্তরীণ উৎস বিশেষ করে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বাজেট অতিরিক্ত ঋণ নিলে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাপ্রাপ্তসহ তারল্য সংকট এবং মুদ্রাস্ফিতিতে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সুতরাং রাজস্ব আহরণ এবং বৈদেশিক উৎস হতে প্রাক্কলিত অর্থ যথাসময়ে সংগৃহিত না হলে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হবে। এজন্য রাজস্ব আহরণে এবং ঘাটতি অর্থায়নে বিশেষ করে বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়নে সাফল্য দেখাতে না পারলে প্রস্তাবিত বাজেট পুরোপুরি বাস্তবায়ন কঠিন হবে। তাই প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন কলা-কৌশলসহ প্রশাসনিক ব্যবস্থা অতীতের যেকোন সময় থেকে বেশি নিতে হবে।

ড. সেলিম আরও বলেন, মোট বাজেট ব্যয় বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে, সামাজিক অবকাঠামো খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। যা বরাদ্দের ২৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ভৌত অবকাঠামো খাতে ১ লাখ ৬৭ হাজার ১১ কোটি টাকা (মোট ব্যয়ের ২৯ দশমিক ৪০ শতাংশ), সাধারণ সেবা খাতে ১ লাখ ৪০ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা (মোট ব্যয়ের ২৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ), সুদ পরিশোধ ৬৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা বা ১১ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং সরকারি বেসরকারি অংশীদ্বারিত্ব, আর্থিক সহায়তা, ভর্তুকি এবং বিনিয়োগ সহ মোট ৩৬ হাজার ৬১০ কোটি টাকা যা বরাদ্দের ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং উক্ত বরাদ্দগুলো যথাক্রমে সংশোধিত বাজেট ২০১৯-২০ চলতি অর্থ বছরের যথাক্রমে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা (২৭ দশমিক ৮১ শতাংশ), ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫৪৫ কোটি (৩১ দশমিক ৮১শতাংশ), ১ লাখ ১০ হাজার ৮১৩ কোটি (২২ দশমিক ০৯ শতাংশ), ৫৭ হাজার ৬৬৪ কোটি (১১ দশমিক ৫০ শতাংশ) এবং ৩০ হাজার ৯৯ কোটি টাকা (৬ শতাংশ) পুন: প্রাক্কলন করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ যে, সামাজিক অবকাঠামো এবং ভৌত অবকাঠামোতে বরাদ্দ বাড়লেও মোট বরাদ্দের শতাংশে হ্রাস পেয়েছে।

Yakub Group

ড. সেলিম বলেন, বিগত তিন বছরে ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৮-১৯ পর্যন্ত যথাক্রমে ৭ দশমিক ২৮, ৭ দশমিক ৮৬ এবং ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার আলোকে চলতি বছরে প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে বিশ্বব্যাপী করোনার প্রভাবে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে আগ্রাসী আক্রান্তে ৫ দশমিক ২ শতাংশে সংশোধিত প্রাক্কলন করা হয়েছে। বাজেট ২০২০-২১ এ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। বাজার চাহিদাসহ অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কোভিড-১৯ পূর্ববর্তী অবস্থায় পুনর্বাসন হলে হয়ত এই প্রবৃদ্ধি অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা আমাদের প্রবৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ চাহিদা। মুদ্রাস্ফিতি ৫ দশমিক ৪ শতাংশে সীমাবদ্ধ রাখার প্রত্যয়ে বাজেট প্রাক্কলন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতকে বিচার বিশ্লেষণপূর্বক অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে যেটি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সমান হবে।

কেননা কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ এবং এই খাতে ২৯ হাজার ২৪৭ কোটির টাকা বরাদ্দ যেটি ২০১৯-২০ এ ছিল ২৫ হাজাদ ৭৩২ কোটি টাকা। তাছাড়া স্বাস্থ্য সেবায় আরও ১৩টি মন্ত্রণালয় যুক্ত আছে, সেগুলোসহ বিবেচনায় নিলে মোট বরাদ্দ ৪১ হাজার ২৭ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষা আরেকটি অগ্রাধিকার খাত, যেটিতে আগামী অর্থ বছরে ৯৫ হাজাদ ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বাজেটের ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং জিডিপির ৩ দশমিক ১ শতাংশ। সংশোধিত বাজেট ২০১৯-২০ এ যেটি ৮১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল।

তিনি বলেন, বরাদ্দের এই প্রবৃদ্ধি সামাজিক নিরাপত্তা ও সুরক্ষার আওতা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পাবে। কৃষি এবং কৃষির উপখাতকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে বাজেটে বিভিন্ন কার্যক্রমের প্রণোদনা, স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা, ভর্তুকি এবং নানা নীতি কৌশল প্রাধান্য পেয়েছে। এই খাতে মোট বরাদ্দ ২৯ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা। যা সংশোধিত বাজেটে ২৭ হাজার ২৩ কোটি টাকা। বরাবরের মতই সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাত যেটি মোট ৮৫ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৫ দশমিক ১ শতাংশ এবং যেটি সংশোধিত ২০১৯-২০ এ প্রাক্কলন হয়েছে ৭৭ হাজার ০৩৯ কোটি টাকা। যদিও বরাবরের মতোই উল্লেখযোগ্য বাজেট বরাদ্দ পাবলিক সার্ভিস খাতে হয়ে থাকে যেখানে সুদ পরিশোধ ৬৩ হাজাফ ৭৭৬ কোটিসহ মোট বরাদ্দ ১ লাখ ৮০ হাজার ৭১৫ কোটি টাকা,যেটি মোট বরাদ্দের প্রায় ৩২ শতাংশ। এছাড়া পরিবহণ ও যোগাযোগ খাতে ৬৪ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের ১১ দশমিক ৪ শতাংশ, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ে ৩৯ হাজার ৫৭৩ কোটি (বরাদ্দের ৭ শতাংশ), প্রতিরক্ষা খাতে ৩৪ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা (বরাদ্দের ৬ দশমিক ১ শতাংশ), সামাজিক সুরক্ষা ও কল্যাণ খাতে ৩২ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা (বরাদ্দের ৫ দশমিক শতাংশ) ইত্যাদি খাতগুলো উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ পেয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন খাতগুলোর বরাদ্দ বিশ্লেষণ করলে বলা যায়, প্রস্তাবিত বাজেট জনকল্যাণ মূলক বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বিধানমূলক কর্মসূচি এবং কর সহনীয়করণ সহ প্রবৃদ্ধি সঞ্চারী মেঘা প্রকল্পসমূহ এবং স্থবির বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির নানা কলা কৌশল অগ্রাধিকার পেয়েছে।

ড. সেলিম বলেন, দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট, ব্যবসা ব্যয়-হ্রাস , বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান, অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র বিমোচনের লক্ষ্যে এই বাজেটে সামাজিক ও ভৌত অবকাঠামো খাতে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যয়ের গুনগতমান, বাস্তবায়ন সময়, মোট প্রকল্প ব্যয়, ইত্যাদির উপর অধিক গুরত্বারোপ করে সঠিক ব্যয়ে সঠিক সময়ে এবং সঠিক গুনে ও মানে প্রকল্প কার্য সমাপ্তের জন্য সঠিক মানদন্ড নিশ্চিত করতে হবে। চলমান বৃহৎ প্রকল্প গুলোর বাস্তবায়নের হার সময় সময় প্রেস ব্রিফিং-এর মাধ্যমে জনসম্মুক্ষে প্রচারের ব্যবস্থা থাকা উচিত। যেমন বাংলাদেশে দৈনিক কতটুকু বা কত কিলোমিটার রাস্তা সম এককে তৈরী হচ্ছে, দৈনিক কত কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে (সম এককে) ইত্যাদি প্রকাশ করা। সামাজিক ও ভৌত অবকাঠামোর কারণে সুফলগুলো সুস্পষ্ট করা উচিত বলে মনে করি।

প্রস্তাবিত বাজেটে বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য রাজস্ব প্রণোদনার বিষয়ে উল্লেখ করতে গিয়ে ড. সেলিম বলেন, নিম্ন আয়ের ব্যক্তিবর্গ, কুটির শিল্প, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প ও ব্যবসায়ী বৃন্দকে কোভিড-১৯ এর ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য আয়করের অ-করযোগ্য সীমা বৃদ্ধি, প্রথম ১ লাখ টাকায় ৫ শতাংশ আয়কর, সর্বোচ্চ কর হার ৩০ শতাংশের বদলে ২৫%, অতালিকাভূক্ত কর হার হ্রাস, কৃষি ও কৃষি উপখাতে নিয়োজিত কৃষি যন্ত্রাপাতিতে শূল্ক হ্রাস, ভ্যাট রেয়াত, কাস্টমসের হয়রানি রোধে বিভিন্ন কর্ম কৌশল, রপ্তানীমুখী দেশীয় এবং আমদানী পরিপূরক শিল্প ও ব্যবসায়কে সুরক্ষায় বিভিন্ন ধরণের প্রণোদনার প্রবর্তন, শুল্ক হ্রাস, কর হার হ্রাস, রাজস্ব প্রণোদনাসহ বিভিন্ন নীতি কৌশলের সহায়তা বাজেটে পরিস্ফুটিত হয়েছে। মোটামুটি বড় ধরনের নতুন কোন কর আরোপ ছাড়াই এই বাজেট প্রণীত হয়েছে। রাজস্বের উৎসের জন্য অনেকটা ঢালাও ভাবে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে অর্থমন্ত্রী অনেকটাই কালো বাজারীর অর্থের উৎসের উপর নির্ভরশীল হতে চেয়েছে। অতীত অভিজ্ঞতা এ ব্যপারে সুখকর নয়। তবে আগামী অর্থবছরের অভিজ্ঞতাটা ভিন্ন হয় কিনা দেখার বিষয়। সকল পক্ষকে মোটামুটি স্বস্তি দিয়ে এই বাজেট বাস্তবায়নের যে পরিকল্পনা রচিত হয়েছে সেটি সঠিক অর্থে দক্ষতা ও আন্তরিকতার সাথে এবং সময়মত বাস্তবায়নের সকল কর্মকৌশল গ্রহণ ব্যতীত সফলতা দূরহ হবে।

ড. সেলিম বলেন যে, বিশ্ব মহামারী কোভিড-১৯ বিগত কয়েক মাসে বিধ্বস্ত ও বিপর্যস্ত বিশ্বকে একটি শিক্ষা স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, অদূর ভবিষৎতে বা নিকট ভবিষৎতে বহু জানা, অসস্পষ্ট, স্পষ্ট এবং অজানা চ্যালেঞ্জ এবং বিপদ যে কোন সময় দেখা দিতে পারে, যেটি অর্থনীতি পুর্নগঠনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে যা অবশ্যই বৈচিত্রময় ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিশ্চিত ঘটনাবলীর সাথে দ্রুত তাল মিলিয়ে পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জনের ব্যবস্থা রেখেই অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সংগে সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পূর্ব প্রস্তুতি থাকতে হবে।

এমএফও

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!