চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে সড়ক মেরামত করার সময় প্রতিপক্ষের গুলিতে সেনা সদস্যসহ চার ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
শনিবার (৪ মার্চ) সকালে উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড উত্তর পুরানগড় পাঁচ ঘরপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন ওই এলাকার মৃত সাহেব মিয়ার ছেলে আবছার উদ্দিন (৫২), মৃত আনু মিয়ার ছেলে মো. জিন্নাত আলী (৩৮), আহমদ কবিরের ছেলে মোহাম্মদ খোকন (৩৫) ও সেনা সদস্য মো. আবু হানিফ (৩২)।
এই ঘটনায় ওই এলাকার নুরুল ইসলাম ওরফে সর্বহারা নুরুর ছেলে জাহেদুল ইসলামকে (৩৫) দায়ী করছেন আহতরা। তবে এই ঘটনায় তিনি জড়িত নন বলে জানান।
এই ব্যাপারে গুলিবিদ্ধ মো. আবছার, জিন্নাত আলী ও মো. খোকন জানান, আমাদের পাঁচ ঘরপাড়া এলাকায় ৫০ পরিবার বসবাস করে। গত কিছুদিন আগে সড়কের কিছু অংশ স্থানীয় চেয়ারম্যান মেরামত করে দেন। গত বর্ষায় সড়কের কিছু অংশ ধসে যায়। শনিবার সকালে এলাকার লোকজন মিলে স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটি মেরামত করছিল। জাহেদুলের বাড়ির সামনের কিছু অংশ মেরামত শুরু করলে তার মা-বাবা ও পরিবারের সদস্যরা প্রথমে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের দিকে তেড়ে আসে। পরে জাহেদ বন্দুক নিয়ে এসে এলোপাতাড়ি গুলি করলে আমরা চারজন গুলিবিদ্ধ হই।
স্থানীয়রা আমাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। ঘটনার পর পর জাহেদ পালিয়ে যান।
সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তানভির হাসান বলেন, ‘গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি চার ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি এক্স-রে দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে যদি গুরুতর কেউ থাকে, তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেলে রেফার করা হবে।’
জানতে চাইলে জাহেদুল ইসলাম ঘটন্য় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘সড়ক মেরামতের সময় পাড়ার লোকদের সঙ্গে আমাদের জায়গা সড়কে ঢোকার বিষয় নিয়ে তর্কাতর্কি হয়। এই সুযোগে আমাদের পাশের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের হাশিমপাড়ার শাহনেওয়াজ সওদাগর ও সাইফুদ্দিন বন্দুক নিয়ে এসে গুলি করে পালিয়ে যান। এই ঘটনায় আমি জড়িত নই।’
জাহেদুল আরও বলেন, ‘শাওনেওয়াজ ও সাইফুদ্দিন পুরাগড়ের চিরিংঘাটা এলাকায় একটি হত্যা মামলায় আমাকে আসামি করে। তখন থেকে তাদের সঙ্গে আমার বিরোধ শুরু। ঘটনার পর পর তারা আমার বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।’
এই ব্যাপারে শাহনেওয়াজ ও সাইফুদ্দিন বলেন, ‘জাহেদ গুলি করার পর এলাকাবাসীর সঙ্গে আমরাও তাকে খুঁজতে যাই। তাই তিনি আমাদের দোষারোপ করছেন।’
উপজেলার পুরানগড় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আ ফ ম মাহবুবুল হক সিকদার বলেন, ‘জাহেদ এলাকায় খারাপ প্রকৃতির লোক হিসেবে পরিচিত। তাকে অনেকবার নিষেধ করলেও তিনি শুনেননি। তার বিরুদ্ধে থানায় কয়েকটি মামলাও রয়েছে।’
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এই ঘটনায় এখনও কেউ থানায় মামলা বা অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পাওয়ার পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ডিজে