ষোলশহরে পাহাড় কেটে স্যানমারের বহুতল ভবন তৈরিতে হাইকোর্টের মানা

বানাচ্ছে ২৫ তলার ‘ইটের খোপ’, অনুমোদনই নেই

চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরে আস্ত পাহাড় কেটে ২৫ তলাবিশিষ্ট দুটি টাওয়ার বানাচ্ছিল আবাসন প্রতিষ্ঠান স্যানমার প্রপার্টিজ। ষোলশহর বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডানকান হিল কেটে তৈরি করা হচ্ছিল এই টাওয়ার দুটি। এজন্য ইতিমধ্যে শতাধিক গাছ কেটে ফেলেছে প্রতিষ্ঠানটি। সামনে কাটা হবে আরও গাছ।

শেষ পর্যন্ত ডানকান হিল এলাকায় পাহাড় ও গাছকাটা এবং বহুতল ভবন নির্মাণের সকল কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তিন মাসের জন্য এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও চট্টগ্রামের বাসিন্দা সজল মল্লিকের করা এক রিট আবেদনে শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালত অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুলও জারি করেছেন। রুলে পরিবেশ অধিদফতরের অনুমতি ছাড়া পাহাড় এবং গাছ কেটে বহুতল নির্মাণ বন্ধে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং পরিবেশ রক্ষায় অবৈধ পাহাড় কাটা বন্ধে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, পরিবেশ ও বন সচিব, ভূমি সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক, দ্য সানমার প্রপার্টিজ লিমিটেডকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সবুজ পাহাড়রাজি ধ্বংস করে ২৫ তলাবিশিষ্ট এরকম দুটি টাওয়ার বানাতে চায় আবাসন প্রতিষ্ঠান স্যানমার প্রপার্টিজ।
সবুজ পাহাড়রাজি ধ্বংস করে ২৫ তলাবিশিষ্ট এরকম দুটি টাওয়ার বানাতে চায় আবাসন প্রতিষ্ঠান স্যানমার প্রপার্টিজ।

অভিযোগে জানা যায়, ষোলশহর বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডানকান হিলের পাদদেশে মাটি কেটে চলছে স্যানমার প্রপার্টিজের টাওয়ার নির্মাণের প্রাথমিক কাজ। সেই পাহাড় এখন পরিণত হয়েছে প্রায় বিরানভূমিতে। অথচ গাছ কাটার জন্য বনবিভাগের কাছ থেকে কোনো অনুমোদনই নেওয়া হয়নি। পাহাড়ে বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর থেকেও নেওয়া হয়নি কোনো ছাড়পত্র।

জানা গেছে, ২০১৩ সালে ষোলশহরের ডানকান হিলে ২৫ তলাবিশিষ্ট দুটি টাওয়ার বানানোর অনুমোদন দেওয়া হয় স্যানমার প্রপার্টিজকে। কিন্তু অনুমোদনের শর্ত অনুযায়ী তিন বছরের মধ্যে কাজ শুরু না করায় অন্তত চার বছর আগে সেই অনুমোদন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হয়ে গেছে।

এর আগে পাহাড়চূড়ায় পরিবেশ বিধ্বংসী এরকম বহুতল ভবনের অনুমোদনও স্যানমার প্রপার্টিজ সিডিএর তৎকালীন কর্তাব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করে নিয়েছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর বন গবেষণা ইনস্টিটিউট এলাকার ২৪ জন বাসিন্দা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে স্যানমারের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগ আনে।

সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm